নার্সিং শিক্ষা খাতে চরম অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে। দুর্নীতি এ খাতের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের নিচ থেকে শীর্ষ প্রতিটি পদে ঘুষ বর্তমানে ওপেনসিক্রেটে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এই খাতটি। সেই সঙ্গে সিন্ডিকেটের কারণে পদ বিন্যাস না হওয়ায় নার্সিং শিক্ষা খাতের উন্নয়নে কোন অগ্রগতি হচ্ছে না। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি জাতীয় দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অধিদফতরে রূপান্তরিত হলেও কর্মকর্তাদের প্রেষণে (চলতি দায়িত্ব) দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ অধিদফতরটি চালানো হচ্ছে। অধিদফতরের পরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদ শূন্য। নার্সিং কলেজগুলোতেও চরম অব্যবস্থাপনা রয়েছে। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, লেকচারার কোন পদই সৃষ্টি হয়নি। যার কারণে নার্সিং শিক্ষা খাতের উন্নয়ন প্রায় রুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নার্সিং শিক্ষা খাত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসাসেবার বড় অবদান রাখে নার্সিং শিক্ষা খাত। ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সিং শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে ৮টি নার্সিং ইনস্টিটিউটকে নার্সিং কলেজে রূপান্তর করেছিলেন। এন্ট্রি পয়েন্টে সিনিয়র স্টাফ নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণী পদমর্যাদা প্রদানের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু নার্সিং শিক্ষা খাতে কোন অগ্রগতি আসেনি। নার্সিং শিক্ষা খাতে অব্যবস্থাপনা বহু বছর ধরেই চলছে। এ খাতে অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতি থাকার ফলে দেশে নার্স সংকট দেখা দিয়েছে। অব্যবস্থাপনা দুর্নীতি এবং পদ বিন্যাস না হলে দক্ষ, শিক্ষিত, অভিজ্ঞ এবং প্রশিক্ষিত নার্স তৈরি হবে না। এ খাতের উন্নয়ন না হলে স্বাস্থ্যসেবার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। স্বাস্থ্যসেবা পিছিয়ে পড়বে।
নার্সিং শিক্ষার বিরাজমান অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে। এ খাতের উন্নয়নের যে বাধা রয়েছে অর্থাৎ দুর্নীতি দূর করতে হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নার্সিং অধিদফতরের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পূরণ করতে হবে। নার্র্সিং কলেজগুলোর অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে। নার্সিং কলেজগুলোতে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও লেকচারারের পদ তৈরি করে নিয়োগ দিতে হবে।
সৌজন্যে: সংবাদ