পদ্মা সেতুর ওপরে যানবাহন থামিয়ে সেলফি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আজ সকাল ছয়টা থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। এরপর থেকেই যাত্রী, চালক ও দর্শনার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। তাদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস অনেকটা বেপরোয়া পর্যায়ে পৌঁছতে দেখা গেছে। হেঁটে সেতু পার হওয়া এবং সেতুতে দাঁড়ানোর কোন নিয়ম না থাকলেও সকালে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটতে দেখা গেছে।

অনেকেই যানবাহন দাঁড় করিয়ে সেতুর উপর দাঁড়িয়ে সেলফি তুলেছে। অনেক মানুষকে হেঁটেই সেতু পার হতে দেখা গেছে। সেতুর রোড ডিভাইডারের উপরে বসে ও দাঁড়িয়ে লোকজন ছবি তুলেছে। মোটরসাইকেল প্রাইভেটকার ও বাস সেতুর উপরে অবলীলায় থেমে ইচ্ছে মতো ছবি তুলেছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেতু কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা ছিল না।

পদ্মা সেতু আগে ভাগে পাড়ি দেয়ার জন্য গভীর রাত থেকে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের টোলপ্লাজায় যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল এসে জড়ো হতে থাকে। ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে মাওয়া প্রান্তের টোলপ্লাজা খুলে দেয়া হয়। ছয়টা থেকে শুরু হয় যানবাহন পারাপার। ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে সেতু পার হওয়া শুরু হয়। টোল প্লাজা পার হওয়ার পর অনেক যানবাহন সেতুর উপর দাঁড়িয়ে যায়। যাত্রী-চালকরা প্রথম স্মৃতি ধরে রাখতে মোবাইল নিয়ে সেতুতে নেমে পড়ে। ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণের হিড়িক পড়ে যায়।

এক পর্যায়ে সেতুর উভয় লেনেই লোকজনক নিজেদের ইচ্ছে মতো অবস্থান নিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। অনেকেই পায়ে হেঁটে সেতু ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে থাকেন। উচ্ছ্বসিত লোকজন সেতুর রোড ডিভাইডারের উপরে বসে এবং দাঁড়িয়ে বিভিন্নভাবে ছবি তোলেন এবং সেলফি তোলেন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে পায় হেঁটে পার হওয়া এবং সেতুতে দাঁড়ানোর কোন নিয়ম নেই। কিন্তু সকালের দিকে এই অবস্থা ও বিধি নিষেধ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। লোকজন দীর্ঘ সময় নিয়ে সেতুর উপর দাঁড়িয়ে ছবি তোলে এবং সৌন্দর্য উপভোগ করে।

মিন্টু নামে এক ব্যক্তি জানান বলেন, এমন স্মরণীয় দিন আর আসবে না। পদ্মা সেতু পার হওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করার ভাষা নেই। সেতুর ওপর দিয়ে আসার সময় মনে হয়েছে যেন বিশ্ব জয় করেছি।

মোটরসাইকেল চালক বেপরোয়াভাবে সেতুর উপর দিয়ে বাইক চালিয়েছে। সেতুর উপরে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা দর্শনার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেক দর্শনার্থীকে সেতুর উপর দাঁড়িয়ে ভিডিও কলে দেশে এবং বিদেশে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। মোবাইল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পদ্মা সেতুর অবস্থান এবং নিজের অবস্থান স্বজনদের দেখিয়েছেন। এসব অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে সেতু কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। সকালের দিকে সেতু পারাপারের নিয়ম অনিয়মে পরিণত হয়।

মাওয়া প্রান্তের টোল ম্যানেজার কামাল হোসেন জানিয়েছেন, সকাল ৬টায় একটি মোটরসাইকেল সর্বপ্রথম টোল প্লাজা অতিক্রম করে। এই মোটরসাইকেলের মাধ্যমিক প্রথম যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এই টোলপ্লাজায় ৬টি টোলঘর রয়েছে। তবে আজ পাঁচটি টোলপ্লাজা সক্রিয় রয়েছে। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেস এর মাওয়া টোল প্লাজা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার যানবাহনের দীর্ঘ সারি ছিল সকালের দিকে। তবে সকাল দশটার দিকে যানজট কমে একেবারে স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি বলেও জানান। সকলের প্রথম চার ঘণ্টায় ৩ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে বলে টোল প্লাজা সূত্রে জানা গেছে। সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতুতে সাধারণ যান চলাচল শুরু হয়।

টোল প্লাজায় কিছু ভোগান্তি রয়েছে। এখন ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল আদায় হচ্ছে। ছয় মাস পর অটোমেটেড পদ্ধতি টোল আদায় করা হবে।

দীর্ঘ জ্যামে কিছুটা ভোগান্তি হলেও সবাই পদ্মা পাড়ি দিতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। প্রাইভেটকার নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিতে আসা দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রায় এক ঘণ্টা জ্যামের মধ্যে আটকে ছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত সেতু পাড়ি দিতে পেরে নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে - dainik shiksha তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত - dainik shiksha বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050151348114014