ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সেনা অভিযানে পাঁচ ‘বেসামরিক’ নাগরিক হত্যার ঘটনায় উপত্যকাজুড়ে নতুন করে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তুমুল ভারতবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় গতকাল সোমবার রাজ্যটির কিছু অংশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং স্কুল-কলেজ। বেশ কয়েকটি এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে উত্তেজিত জনতার সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিবৃতির বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, রোববার রাতে সোপিয়ানের পোহন এলাকার পাশে সেনাদের টহল ভ্যান একটি গাড়িকে থামার নির্দেশ দেয়। এরপরই সেনাদের দিকে ছুটে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালালে এক জঙ্গি নিহত হয়। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একটি আগ্নেয়াস্ত্র। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা আর একটি গাড়ি থেকে তিন তরুণের দেহ উদ্ধার করে। স্থানীয়দের দাবি, তারা সাধারণ নাগরিক ছিল। কিন্তু সোপিয়ানের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চলতি বছর এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো সেনাবাহিনীর গুলিতে বেসামরিক নাগরিক নিহত হলো।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সেনাবাহিনীর গুলিতে তিন ব্যক্তি নিহত হলে প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে কাশ্মীর। সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, পাথর নিক্ষেপকারী উত্তেজিত জনতার সহিংসতা মোকাবিলা করতে গিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, রোববার বেসামরিক নাগরিক হত্যা ও তাদের জঙ্গি প্রমাণে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নেমে আসে শত শত কাশ্মীরি জনগণ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে তারা। কাশ্মীরে নয়াদিল্লির শাসনের অবসান দাবি করা হয়। পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের হটানোর চেষ্টা করেন। বেশ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষও ছড়িয়ে পড়ে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রোববারের ঘটনার বিষয়ে কোনো এফআইআর দায়ের করেনি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
শ্রীনগরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্রেটার কাশ্মীর জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কাশ্মীরের সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কাশ্মীর সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ আলতাফ বুখারি জানান, সোমবার স্কুল-কলেজগুলো বন্ধ থাকবে।