প্রসঙ্গ প্রশ্নপত্র ফাঁস

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রশ্নপত্র ফাঁসে প্রেসের কর্মচারীসহ ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ঘাটিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ইতিবৃত্ত। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের তদন্তে বলা হয়েছে, যে প্রেসে এই প্রশ্নপত্র ছাপা হতো সেই প্রেসের একজন কর্মচারী ও তার দুজন সহযোগী প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূল হোতা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত চক্রটি প্রশ্নপত্রের জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ২ থেকে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে ছাপা হতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ বিভাগের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। একই প্রেস থেকে প্রতি বছর প্রশ্নপত্র ছাপা হওয়ায় তা ফাঁসের সুযোগ সৃষ্টি হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায়ে গত বুধবার জামালপুর থেকে সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকালে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড থেকে খান বাহাদুর নামের এক প্রেস কর্মচারী পুলিশের জালে ধরা পড়েন। যিনি ছিলেন প্রশ্নফাঁসের মূল হোতা। স্মর্তব্য, প্রশ্নফাঁস ও ডিভাইস সাপ্লাই পদ্ধতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সাত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। তাদের তথ্যানুযায়ী ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর জিগাতলা থেকে ডিভাইস সাপ্লাই ও প্রশ্নফাঁস গ্রুপের অন্যতম সদস্য নাজমুল হাসান নাঈমকে গ্রেফতার করা হয়।

৯ ডিসেম্বর রাজশাহী মেডিকেল এলাকা থেকে বনি ইসরাইল ও বিনোদপুর থেকে মারুফকে গ্রেফতার করা হয়। ১১ ডিসেম্বর এই চক্রের সদস্য ক্রীড়া কর্মকর্তা রকিবুল হাসান ধরা পড়েন। পরদিন তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেফতারকৃতদের তথ্যানুযায়ী, ২০১৫ ও ’১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। আর চলতি বছর এই পরীক্ষা নিয়ে ডিজিটাল জালিয়াতি করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষা প্রহসনে পরিণত হয় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কারণে।

ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের সাহায্যে পরীক্ষা দিয়ে অযোগ্যদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ যেমন সৃষ্টি হয়েছে তেমন বঞ্চিত হয়েছে অপেক্ষাকৃত যোগ্যরা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতরা এসএসসি, এইচএসসি, বিভিন্ন ব্যাংক ও শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গেও জড়িত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসে কর্তৃপক্ষের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া না গেলেও বার বার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিয়ে একই বেসরকারি প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপানোর বিষয়টি ছিল দায়িত্বহীনতার নামান্তর। আমরা আশা করব, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে আরও যেসব চক্র জড়িত তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

 

সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004349946975708