ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে দেশে। প্রথম দিন সোমবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩৬০ জনকে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। বেলা ৯টা থেকে শুরু হয়েছে টিকাদান, চলবে বেলা ২টা পর্যন্ত।

ছবি : দৈনিক শিক্ষা

টিকাগ্রহীতাদের পর্যবেক্ষণ শেষে ৭ থেকে ১০ দিন পর অন্যদের এই টিকা দেওয়ার কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তৃতীয় টিকা হিসেবে ফাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে।

সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ২৪ জন ফাইজারের টিকা নিয়েছেন। এই কেন্দ্রে ১২০ জনের টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে। এখানে প্রথম ফাইজারের টিকা নেন মালিবাগের বাসিন্দা রাহাত চৌধুরী।

ছবি : দৈনিক শিক্ষা

তিনি জানান, প্রথমে টিকা নেওয়ার আগ্রহ না থাকায় নিবন্ধন করেননি। পরিবারের চাপে এপ্রিলে টিকাদান বন্ধ হওয়ার দুইদিন আগে নিবন্ধন করেছেন।

“সেদিক থেকে ভাগ্য ভালো বলতে হয়। গতকাল ফাইজারের টিকা নেওয়ার জন্য এসএমএস আসে। আজ সবার আগে এই টিকা নিলাম, ভালোই লাগছে। ইঞ্জেকশন পুশ করার সময় যে ব্যাথা লাগে তাও হয়নি। সবার আগে টিকা নিয়েছি এজন্য আরও ভালো লাগছে। সবাইকে বলতে চাই টিকা নেওয়া উচিত,” বলেন রাহাত চৌধুরী।

ছবি : দৈনিক শিক্ষা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা জিগাতলার বাসিন্দা হারুনুর রশিদ জানান, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিতে গত মার্চে নিবন্ধন করলেও পরে তিনি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় টিকা নিতে পারেননি। সেরে ওঠার পর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদান বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, “ফাইজারের টিকার জন্য এসএমএস যায় মোবাইলে। আজ এসে টিকা নিলাম। অস্বাভাবিক কোনো কিছু অনুভব করছি না।”

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

তিনি জানান, পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেওয়ার পর পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরবর্তীতে আরও বেশি মানুষের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে।

ডা. ফ্লোরা বলেন, “ফাইজারের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া টিকার মিশ্রণ ঠিকমতো করাও বড় ব্যাপার। এ কারণে এই টিকা দেওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকমতো চলছে।

“টিকা দেওয়ার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা সেভাবেই কাজ করছেন। যারা টিকা নিয়েছেন তারাও কোনো সমস্যার কথা জানাননি। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝার মতো সময় এখনও হয়নি। তারপরও যেহেতু এই টিকা আমরা প্রথম দিচ্ছি সে কারণে যেসব হাসপাতালে আইসিইউ আছে, স্পেশাল কেয়ার নেওয়ার ব্যবস্থা আছে সেগুলোকে কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করেছি।” তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ফাইজারের টিকার জন্য কোনো অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হয়নি। তবে যারা বিদেশগামী তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।

“আমাদের শ্রমিকদের যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো কোনো দেশে ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়ার কথা বলে দেওয়া হচ্ছে। সে বিষয়গুলো আমাদের চিন্তার মধ্যে আছে, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি।”

গত ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়ার মাধ্যমে দেশে কোভিডের টিকার প্রথম পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়। পরে ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদান শুরু হয়।

দ্বিতীয় টিকা হিসেবে দেশে দেওয়া হচ্ছে চীনের সিনোফার্মের টিকা। ২৫ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা সালাম সমতাকে দিয়ে এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়। গত শনিবার থেকে দেশের ৬৭টি কেন্দ্রে সিনোফার্মের টিকার গণপ্রয়োগ শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশে তৃতীয় টিকার চালান হিসেবে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের তৈরি এক লাখ ৬২০ ডোজের চালান এসে পৌঁছায় গত ৩১ মে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036420822143555