বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. রফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিনামূল্যের বই বিক্রি করার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। বুধবার তাকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করা হয়।
এর আগে বই চুরির মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় একই শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক মো. ওয়াহেদুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছিলো।
জানা গেছে, গত ৩ ডিসেম্বর দুপচাঁচিয়া পাইলট মডের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সরকারি বই চুরির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দায়ের হওয়া জিআর মামলায় (থানায় নথিভুক্ত মামলা) গত ৮ ডিসেম্বর গ্রেফতার হয়েছিলেন দুপচাচিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক মো. ওয়াহেদুল ইসলাম। আর রফিকুল ইসলাম গত ৩১ জানুয়ারি গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাদের গ্রেফতার হওয়ার তারিখ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ের বই বোঝাই একটি ট্রাক গত ৩ ডিসেম্বর দুপচাঁচিয়া পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন একাডেমিক ভবনে আসে। অফিস সহায়ক মো. ওয়াহেদুল ইসলাম ও অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম নতুন বইগুলো বুঝে নেন এবং তা ওই একাডেমিক ভবনে সংরক্ষণ করে। পরে ট্রাকে করে ওই একাডেমিক ভবনে রক্ষিত ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের পুরাতন বই বোঝাই করা হয়। ট্রাক বোঝাই বইগুলো পাশের কাহালু উপজেলার জোগারপাড়া পেপারমিলে বিক্রির জন্য নিয়ে যায়। পেপারমিল কর্তৃপক্ষ সরকারি বইগুলো নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ঘটনাটি অল্প সময়ের মধ্যেই এলাকায় প্রকাশ পায়। ট্রাকচালক বই বোঝাই ট্রাক নিয়ে ফের ওই স্কুলে ফিরে আসেন এবং ট্রাক থেকে বইগুলো আনলোড করে একাডেমিক ভবনে রেখে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাধ্যমিক অফিসের অফিস সহায়ক ওয়াহেদুল ইসলাম ও অফিস সহকারী রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা কৌশলে সটকে পড়ে। ট্রাক চালকও পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ট্রাকটি জব্দ করে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম নিজেই বাদি হয়ে গত ৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে মামলা করেছিলেন। এরপর গত ৮ ডিসেম্বর অফিস সহায়ক মো. ওয়াহেদুল ইসলাম গ্রেফতার হয়েছিলেন। আর ৩১ জানুয়ারি গ্রেফতার হয়েছেন অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম।
গ্রেফতার হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী মো. ওয়াহেদুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
বুধবার অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি গ্রেফতার হওয়ায় অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি আপারেটর মো. রফিকুল ইসলামকে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ অনুযায়ী ওই দিন থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সংশ্লিষ্ট কর্মচারী মামলা চলাকালীন বিধি মোতাবেক জীবনধারণ ভাতা পাবেন।
এর আগে গত ২৭ মার্চ দুপচাচিয়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক মো. ওয়াহেদুল ইসলামকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করেছিলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম ও অফিস সহায়ক মো. ওয়াহেদুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করা হয়েছিলো। এ ঘটনায় তারা দুইজনই গ্রেফতার হয়েছিলেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।