বুকে পাড়া দিয়ে ছাত্রকে পেটানোর অভিযোগ

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

খেলনা নিয়ে মাদরাসার দুই শিশু শিক্ষার্থীর মারামারি হয়। বিষয়টি জানার পর মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা ওবায়দুল হক নোমানের কাছে বিচার দেন এক শিক্ষার্থীর বাবা। পরে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে শাসনের উদ্দেশ্যে বেত্রাঘাত করেন মোহতামিম। তবে শিক্ষার্থী জুবায়ের অভিযোগ, তার বুকের ওপর পাড়া দিয়ে দুটি বাঁশের কঞ্চি (জিংলা) দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন মাদরাসার মোহতামিম। 

শনিবার তারাবি নামাজের পর কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর এলাকার বড় আলমপুর গ্রামের নূরে মদিনা রওজাতুল উলুম মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয়রা জানান, বড় আলমপুর গ্রামের প্রবাসী আক্তারুজ্জামানের ছেলে মো. জুবায়ের (১২) মাদরাসাটির হিফজুল কুরআন বিভাগের ছাত্র। মাদরাসায় গাছের পাতা দিয়ে খেলনা বানিয়ে খেলা করছিল সে। এ সময় জোর করে খেলনাটি নিয়ে যায় তার সহপাঠী বিনাইপাড় গ্রামের সালাহউদ্দিনের ছেলে মো. সামিউল (১২)। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে দু’জনই মাটিতে পড়ে যায়। আঘাতপ্রাপ্ত হয় সামিউলের বাঁ চোখ। বাড়ি গিয়ে বাবার কাছে নালিশ করে সামিউল।

তারা আরও জানান, শনিবার রাতে তারাবি নামাজের পর সামিউলের বাবা লোকজন নিয়ে মাদরাসায় হাজির হয়ে মোহতামিমের কাছে বিচার দাবি করেন। এর পর জুবায়েরকে মারধরের ঘটনা ঘটে।

আহত জুবায়ের বলে, ‘বড় হুজুর (মোহতামিম) আমার বুকের ওপর পারা দিয়ে দুটি জিংলার বেত দিয়ে পিটিয়ে সারা শরীর জখম করে দেন। পরে পরিবারের কাউকে ঘটনা বলতে নিষেধ করেন তিনি।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা সাকিলা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে রোববার ভোররাতে সেহরি খেতে বাড়ি এসে জানায়, সে সেহরি খাবে না, রোজা থাকবে। কারণ হিসেবে জানায়, হাতে ব্যথা পেয়েছে। সকালে মাদরাসায় যেতে বললে জুবায়ের জানায়, তার খারাপ লাগছে। তার হাতের ব্যথা দেখতে গিয়ে লক্ষ্য করি শরীরে প্রচণ্ড জ্বর। জামা খুলে দেখি, সারা শরীরে বেতের আঘাতের চিহ্ন। এ ঘটনা কেন জানায়নি জানতে চাইলে সে বলে, বড় হুজুর নিষেধ করছেন। বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ছেলেকে চিকিৎসা দেই।’

পৌর সহায়তা কমিটির চার নম্বর ওয়ার্ডের সহায়ক সহিদুল ইসলামের ভাষ্য, মাদরাসার মোহতামিম এত রুক্ষ বিচার না করে লঘু বিচার করতে পারতেন। তার পরও সালিশে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে মাওলানা ওবায়দুল হক নোমান বলেন, ‘তারাবি নামাজ শেষে অনেক লোকজন নিয়ে এসে জুবায়েরের বিরুদ্ধে সামিউলের বাবা বিচার দাবি করেন। জুবায়েরের আঘাতে সামিউলের চোখ নষ্ট হয়ে যেত। এ ধরনের ভয়ংকর অপরাধ যাতে আর না করে, তার জন্য ভয় দেখাতে এবং উপস্থিত লোকজনকে শান্ত করতে তাকে শাসন করেছি। শাসনটা এত বড় হয়ে যাবে ভাবিনি।’

জানতে চাইলে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, মাদরাসাছাত্রের বেত্রাঘাতে আহত হওয়ার ঘটনাটি কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি - dainik shiksha জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি - dainik shiksha রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন - dainik shiksha চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য - dainik shiksha দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের - dainik shiksha এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0022618770599365