করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সারা বিশ্বের প্রায় ৯৭ লাখ শিশু আর কখনো স্কুলে ফিরবে না। এনজিও সেভ দ্য চিলড্রেন সোমবার (১৪ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির রিপোর্টের শিরোনাম হলো ‘আমাদের শিক্ষা বাঁচাও’। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এএফপির।
ইউনেস্কোর উপাত্তের বরাত দিয়ে এ সংস্থাটির দাবি, গত এপ্রিল থেকে বিশ্বব্যাপী ১৬০ কোটি শিশু স্কুল ও কলেজের বাইরে আছে। অর্থাৎ প্রায় ৯০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী কোভিড-১৯ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্বের পিছিয়ে পড়া দেশগুলো শিক্ষাখাতে খরচ কমাবে। ফলে প্রায় ৯৭ লাখ শিক্ষার্থী আর কখনো স্কুলের মুখ দেখবে না। একই সঙ্গে ৯ থেকে ১২ কোটি শিশুর পরিবার স্বচ্ছলতা হারাবে।
প্রতিবেদনে এনজিও সংস্থার দাবি, শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব জরুরি অবস্থা আসছে। বিশ্বের ১২টি দেশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। নিম্ন বা মাঝারি আয়ের দেশের অবস্থাও ভালো নয়।
সংস্থাটির হিসেব অনুযায়ী, মহামারির ফলে দেশগুলো শিক্ষাখাতে ৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলার কাটছাঁট করবে। তার প্রভাব পড়বে প্রায় এক কোটি শিশুর ওপর। যে ১২টি দেশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ সেই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, আইভরি কোস্ট, ইয়েমেন, গিনি, মৌরিতানিয়া, লাইবেরিয়া, শাদ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানুষের ইতিহাসে এ প্রথম বিশ্বজুড়ে শিশুদের পুরো প্রজন্মের শিক্ষাব্যবস্থায় আঘাত লেগেছে। ৯ থেকে ১১ কোটি ৭০ লাখ বাচ্চা আরও গরিব হয়ে যাবে। ফলে তারা আর স্কুলে থাকবে না। তারা বাধ্য হয়ে পরিবারকে সাহায্য করার জন্য কাজ করবে। দরিদ্র হয়ে যাওয়ার কারণে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেয়ার প্রবণতা বাড়বে। সেই পরিবারে শিশুদের পড়াশোনা করানোর ক্ষমতাও থাকবে না।
প্রায় ৯৪ পৃষ্ঠার ওই রিপোর্টে বলা আরও হয়েছে, ছেলেদের থেকে মেয়েদের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। লিঙ্গবৈষম্য বাড়বে। মেয়েদের শিশু অবস্থায় বিয়ে দেয়ার প্রবণতা বাড়বে। ফলে তারা বাধ্য হবে কম বয়সে গর্ভবতী হতে। এতে আগের মতো মাতৃমৃত্যুর হার বেড়ে যাবে।
সেভ দ্য চিলড্রেন দাবি করছে, এখন থেকে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের শেষ নাগাদ নিম্ন ও মাঝারি আয়ের দেশগুলো শিক্ষাখাতে ৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বরাদ্দ কমাবে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের শেষ নাগাদ এ বাজেট কাটতির পরিমাণ ১৯ হাজার ২০০ কোটি ডলার ছাড়াতে পারে।