গোপালগঞ্জে এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষকের চাষ করা কাটা ধান নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী কামাল মিনার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ সদরের নিজড়া ইউনিয়নের নারিকেলবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক কানাই লাল বণিক এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে নারিকেলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কানাই লাল বণিক ওই গ্রামের জাবের হোসেনের কাছ থেকে ৩১ শতাংশ জমি ক্রয় করে চাষাবাদ করে আসছিলেন। কিন্তু জমির মালিক বিদেশে থাকায় জমিটি রেজিস্ট্রি করা সম্ভব হয়নি।
সম্প্রতি তিনি দেশে আসলে এলাকায় প্রভাবশালী কামাল মিনা প্রভাব বিস্তার করে জমি রেজিস্ট্রিতে বাঁধা দেয়। কয়েকদিন আগে তিনি ওই জমিটি নিজেই কিনে নেন।
কামাল মিনা গোপালগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি করেন। ইতোপূর্বে নারিকেলবাড়ী গ্রামের দীনেশ বিশ্বাসের কাছ থেকে সুদে টাকা লাগানোর বিনিময়ে তার কাছ থেকে আমমোক্তার নামা নিয়ে পরবর্তীতে ওই জমি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নারিকেলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানাই লাল বণিক বলেন, বছর দুয়েক আগে কামাল মিনা আমার একটি জমিতে জোর করে পুকুর কাটার চেষ্টা করে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তিনি ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে ঝামেলা এড়াতে ওই জমি নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তার কাছে বিক্রি করে দিলে কামাল মিনা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। নানাভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি আমার টাকা দিয়ে কেনা জমি জোর করে নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নেন।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে নিজড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমেদ আলী (ধলু মিনা) জানালে তিনি আমার চাষ করা জমি থেকে ধান কেটে নিতে বলেন। আমি ধান কাটার পর কামাল মিনা তার লোকজন দিয়ে কাটা ধান নিয়ে যায়।
এর আগে, তার ছেলে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক তুষার কান্তি বণিক মোবাইল ফোনে বিষয়টি গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকাকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
গোপালগঞ্জ সদরের নিজড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহমেদ আলী (ধলু মিনা) বলেন, আমি জরুরি কাজে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছি। মোবাইল ফোনে দুই পক্ষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। গোপালগঞ্জে আসার পর বিষয়টি মীমাংসা করে দেব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল মিনার বলেন, আমি ক্রয় সূত্রে ওই জমির মালিক। দুই মাস আগে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছি। কানাই লাল বণিক জমিটি বর্গা করতেন। উনি আমার ভাগের অংশের ধান দিতে অস্বীকার করায় আমার লোকজন দিয়ে তা বাড়িতে নিয়ে গিয়েছি।