নওগাঁর জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর জাল করে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগে জানা যায়, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. শাফায়েত সিদ্দীকি জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। এরপর ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিভিন্ন কারণে তার ছেলেকে অন্য স্কুলে ভর্তি করার জন্য প্রধান শিক্ষক এসএম ইব্রাহিম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি ছাড়পত্র হিসাবে একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন। যা দেখিয়ে শাফায়েতকে গত ৬ জানুয়ারি মহাদেবপুর সর্বমঙ্গলা (পাইলট) উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করেন ও ওই স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হিসেবে রেজিষ্ট্রেশন সম্পূর্ণ করেন। জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র না থাকা শর্তেও শাফায়েতের ছবি, স্বাক্ষর জাল করে অভিভাবককে না জানিয়ে জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (এসএম ইব্রাহিম) তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হিসেবে নবম শ্রেণিতে রেজিষ্ট্রেশন করেন। এ ঘটনা জানতে পেরে ওই অভিভাবক জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করতে একাধিক বার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি বাতিল করাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর বাবা মো. আবু বক্কার ছিদ্দীক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার ছেলেকে আমি সর্বমঙ্গলা (পাইলট) উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি গত জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখে। তারপর থেকে সে ঐ স্কুলে লেখাপড়া করে। এখন শুনি জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমার ছেলের রেজিস্ট্রেশন করেছে। আমি তাকে রেজিস্ট্রেশন ফি দেইনি এবং আমার ছেলে রেজিস্ট্রেশন কার্ডে স্বাক্ষরও করেনি তাহলে আমার ছেলের স্বাক্ষর কে করেছে? এ কারণে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ইব্রাহিম মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি ওই শিক্ষার্থীকে টিসি দেইনি তাকে আমি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি উপবৃত্তির জন্য। সে হিসাবে সে এখনো আমার ছাত্র। এখন আমরা করোনা পরিস্থিতির স্বীকার। কোন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে কিনা সেটা আমি বলতে পারবো না। রেজিস্ট্রেশনের কাজ অফিস সহকারী করেন।
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ ব্যপারে শিক্ষার্থীর বাবার কাছে থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ইউএনও স্যারের অফিস থেকে অভিযোগ পত্রটি আমি পেয়েছি। এখন এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যাতে এই শিক্ষার্থীর কোন ক্ষতি না হয় সেটা আমরা লক্ষ্য রাখবো।