শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষক

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম |

একটি শিশুর প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের সূতিকাগার হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রাথমিক শিক্ষা যদি যথাযথভাবে সম্পন্ন করা যায় তাহলে জাতি উন্নতির পথে অগ্রসর হতে শুরু করবে। বর্তমানে সমাজের সকল স্তরের মানুষই প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছে।

আমরা জানি এক দশক আগেও বাংলাদেশে স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা শতকরা ১০০ ভাগ ছিল না। বর্তমান সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ যেমন শতভাগ উপবৃত্তি প্রদান, স্লিপ কার্যক্রম, মিড ডে মিল, বছরের প্রথম দিন বই উত্সব উদ্যাপনের মাধ্যমে বই বিতরণ, বিনা বেতনে শিক্ষা, বাল্যবিবাহ রোধ প্রভৃতি কারণে স্কুলগামী ছেলেমেয়ের সংখ্যা বেড়েছে।

এই সাফল্যগুলোর পর এখন প্রয়োজন শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন করা। এ লক্ষ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারেন একজন শিক্ষক। শুরুতে প্রাথমিক শিক্ষাকে আকর্ষণীয় ও আনন্দদায়ক করে গড়ে তোলার জন্য বিদ্যালয় ও শ্রেণিকক্ষের পরিবেশকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে। এরপর শিক্ষক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করে শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করে তুলবেন।

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে যুগোপযোগী করে তুলতে হবে। আকর্ষণীয় ও প্রয়োজনীয় বাস্তব উপকরণ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখাতে হবে। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিতে হবে। এছাড়া বিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষাক্রম কার্যাবলি অব্যাহত রাখতে হবে। ছড়া, গান, নাচ ইত্যাদির মাধ্যমে জড়তা কাটিয়ে তাদের বিদ্যালয়মুখী করতে হবে। শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। যেন তারা প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারে।

শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। বিদ্যালয়ে ফুলের বাগান, সবজি বাগান তৈরি করার মাধ্যমে উত্পাদনশীল কাজের প্রতি আকৃষ্ট করতে হবে।

একটি শিশু ভবিষ্যতে কতটুকু ন্যায়-নীতিবান, আদর্শবান, চরিত্রবান হবে কিংবা দেশ-জাতি-সমাজের প্রতি কতটুকু দায়িত্বশীল হবে এটি অনেকাংশেই নির্ভর করে তার প্রাথমিক জীবনের শিক্ষার ওপর। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এইসব ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মানবীয় গুণাবলির উত্কর্ষ সাধন শিক্ষার ভিত্তিকে মজবুত করে এবং শিশুর শিক্ষা পরিপক্বতা পায়।

বর্তমানে প্রাথমিকেও সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি চালু রয়েছে। একজন শিক্ষকের এই পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। শিক্ষককেও সৃজনশীল হতে হবে। বাস্তবমুখী হয়ে কঠোর শ্রম ও গবেষণার মাধ্যমে নতুন-নতুন তথ্য উপাত্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের মানসিকতা শিক্ষা গ্রহণের জন্য সদা প্রস্তুত রাখাই হচ্ছে একজন শিক্ষাগুরুর গুরু দায়িত্ব। আর এই দায়িত্ব যদি একজন শিক্ষক যথাযথভাবে পালন করেন তবেই শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে, দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে।

কুমিল্লা


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি - dainik shiksha আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে - dainik shiksha সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড - dainik shiksha মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি - dainik shiksha ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026302337646484