শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি কমিটির সভা আজ

শেখ রাসেল |

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। আজ মঙ্গলবার শিক্ষা সচিবের সভাপতিত্বে শিক্ষা ক্যাডারের ‘বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি’র (ডিপিসি) সভা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে। এতে প্রায় ৭০০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে।

গত শুক্রবার থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সব কাজ শেষ। পুরনো তালিকার ওপর হালকা ঘষামাজা হয়েছে। তাই অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রোববার সভার কথা থাকলেও তা হয়নি। ওইদিন আপিল বিভাগের আদেশ পাওয়া যায়।

পদোন্নতি নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও মামলা নিয়ে তৎপর থাকা আবদুল মালেক ও শিক্ষা সমিতির একাধিক নেতা গত তিনদিন পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) ও উপ-পরিচালকদের সঙ্গে দেখা করে পদোন্নতির বিষয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা যায়। হালকা  দিক নির্দেশনাও দেয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। বদলি হওয়া একজন সহকারি পরিচালককে শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখায় দেখতে পাওয়ায় রোববার সন্ধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একজন অতিরিক্ত সচিব।

পদোন্নতি কমিটির সভা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষা সচিব মো. সোহবার হোসাইন সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে মামলা-মোকদ্দমা থাকার কারণে পদোন্নতি দেওয়া যায়নি। আজ তারা ডিপিসি সভায় বসে পদোন্নতির বিষয়টি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবেন।

মাউশির রুটিন দায়িত্বের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. শামছুল হুদা বলেন, একটি সভায় এত কর্মকর্তার পদোন্নতির বিষয়টি চূড়ান্ত করা না গেলে প্রয়োজনে দু’তিনটি সভা করা হতে পারে। তবে যত দ্রুত সম্ভব পদোন্নতি চূড়ান্ত করা হবে।

এদিকে, পদোন্নতির খবরে সারাদেশের সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষকরা নড়েচড়ে বসেছেন। দীর্ঘদিন পর তারা পদোন্নতির খবর পেয়ে আশায় বুক বেঁধেছেন। প্রতিদিন খবর নিচ্ছেন অধিদপ্তর ও মন্ত্র্রণালয়ে। ভীড় জমাচ্ছেন কলেজ শাখায়। সমিতির নেতাদের কাছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখা থেকে জানা গেছে, তদবিরের চাপ এড়াতে এবার পদোন্নতি আদেশের সঙ্গে সঙ্গে পদায়নও করা হবে। অধ্যাপক পদে বিভিন্ন বিষয়ে এবার প্রায় ২৫০ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে। অধ্যাপক পদের জন্য বিসিএসের সপ্তম, অষ্টম ব্যাচ থেকে শুরু করে ১৪তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। সহযোগী অধ্যাপক পদে এবার বিসিএসের ১৬, ১৭, ১৮ ও ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তারা ডিপিসির বিবেচনায় রয়েছেন।

সহকারী অধ্যাপক হওয়ার জন্য এবার বিসিএসের  ২৪, ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তারা বিবেচিত হচ্ছেন। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পদোন্নতির তালিকা চূড়ান্ত করা হলে সেদিনই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এবারের পদোন্নতি সম্পর্কে  বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির একজন নেতা জানান, শিক্ষা ক্যাডারের প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তা বিভিন্ন স্তরে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তাদের পদোন্নতি দেওয়া হলেও তাতে সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লেষ থাকছে না। অথচ পদ শূন্যতার অভাবে তাদের পদোন্নতি দেওয়া যাচ্ছে না। এ জন্য নতুন পদ সৃষ্টি করতে হবে। তারা আজ শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে দাবি জানাবেন।

তিনি আরও বলেন, এনাম কমিটির সুপারিশ অনুসারে তাদের ক্যাডারে আরও সাড়ে ১২ হাজার পদ প্রাপ্য রয়েছে। এসব পদ সৃষ্টির জন্য তারা সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, তাদের একই পদে ১২ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত চাকরি করতে হয়। পদোন্নতির জন্য আর কোনো ক্যাডারে এভাবে অপেক্ষা করতে হয় না। আবার ফিডার, লেংথ ও বিষয় ভিত্তিক পদোন্নতি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত ও পথ রয়েছে। রয়েছে অপপ্রচার ও মামলা, পাল্টা মামলা্ ইত্যাদি। আবার কেউ কেউ সমিতি করে নিজের আখের গোছায়। কেউ আত্মীয়-স্বজন ধরে পদোন্নতি নেয়। ভালো পদায়ন পায়।

জানা গেছে, শিক্ষা ক্যাডারে দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি বঞ্চনা চলছে। অন্যসব ক্যাডারে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি দেওয়া হলেও এই ক্যাডারে বিষয়ভিত্তিক (সাবজেক্ট) পদোন্নতি দেওয়া হয়। যা পদোন্নতির বিধির কোথাও উল্লেখ নেই। ফলে বিভিন্ন কলেজে জুনিয়ররা চাকরিতে সিনিয়রদের ওপরে উঠে গেছেন। সপ্তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের অবসর-উত্তর ছুটির (পিআরএল) সময় ঘনিয়ে আসায় তাদের মধ্যে পদোন্নতিযোগ্য প্রায় সবাইকেই এবার পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি সবার চাওয়া কিন্তু তা হতে দেয় না স্বার্থান্বেসী গোষ্ঠী।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025110244750977