সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা দাবি পরিষদের

মিথিলা মুক্তা, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

আন্তক্যাডারের মধ্যে অনেক বৈষম্য রয়েছে। এসব বৈষম্য দূর করে সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা বিধান করার দাবি করেছে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।

শনিবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটেতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষে লিখিত দাবি পড়ে শোনানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকারের পাশে থাকার সুবাদে সব ক্যাডারকে অবহেলিত করে প্রশাসন ক্যাডার এককভাবে সরকারের কাছ থেকে অধিক সুবিধা নিয়ে থাকেন। নিজেদের অনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য, সরকারকে অনেক অনৈতিক সুবিধা দিয়ে থাকেন প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তারা।  

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, আন্তক্যাডার বৈষম্যের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে পদোন্নতিতে বৈষম্য। চাকরিতে নিয়মিত পদোন্নতি না পেলে সামাজিকভাবে অবমূল্যায়িত হন, কর্মে গতিহীনতা তৈরি হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের পদোন্নতির ক্ষেত্রে দেখা যায় একমাত্র প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়মিত পদোন্নতি হয়, পদের অতিরিক্ত পদোন্নতি দিতে সুপার নিউমারি পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতি দেয়া হয়। কিন্তু অন্য ক্যাডার কর্মকর্তারা পদোন্নতির সব যোগ্যতা অর্জন করেও দীর্ঘদিন পদোন্নতির অপেক্ষায় থাকেন।   

তারা বলেন, প্রশাসন ক্যাডার তাদের পদসোপানের অতিরিক্ত সিনিয়র সচিব পদ তৈরি করেছে। অথচ অন্য ক্যাডারগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রেডের পদও নেই। অন্য কোনো সমস্যা না থাকলে, প্রশাসন ক্যাডারের সবাই এক নম্বর গ্রেডে পৌঁছাতে পারেন। কিন্তু অন্য অনেক ক্যাডারে গ্রেড-১ পদ নেই। থাকলেও ১টি বা ২টি গ্রেড-১ পদ আছে। 

শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মত বড় ক্যাডারগুলোতে একটি মাত্র পদ গ্রেড-১ করা হয়েছে। আবার ১টি ১ম গ্রেড থাকলেও ২য় গ্রেড বা ৩য় গ্রেড নেই। শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা যেতে পারেন সর্বোচ্চ চতুর্থ গ্রেডে। পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে কেউ কেউ সেটাও পান না। এমন অবস্থা প্রশাসন ক্যাডার ব্যতীত প্রায় সব ক্যাডারেই। সকল সেক্টরে আধিপত্য ধরে রাখতে পরিকল্পিতভাবে বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে। সব ক্যাডারের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রেডের পদ সৃজন করে বৈষম্য নিরসন করা জরুরি।

প্রয়োজন অনুযায়ী পদসোপান তৈরি করে পদসমূহ আপগ্রেড করে বৈষম্যহীন করা জরুরি। প্রশাসন ক্যাডারের জন্য সাতটি এবং বেনামে আরো তিনটি পদ থাকলেও অনেক ক্যাডারের পদসোপান চার এর মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে, যোগ করেন নেতারা। 

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বা পদমর্যাদাক্রম হলো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের পদের ক্রমবিন্যাস; যার মাধ্যমে তাদের প্রোটোকল বা সুপিরিয়রিটি নির্ধারিত হয়। প্রশাসন ক্যাডারের নিজেদের সুবিধামত এটি বার বার সংশোধনের ফলে চরম বৈষম্য তৈরি হয়েছে। এ কারণে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোতে দেখা যায় কোন ক্যাডারের ৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা  প্রটোকল পেলেও অন্য ক্যাডারের ৪র্থ বা ৩য় গ্রেডের কর্মকর্তারা অবমূল্যায়িত হন। 

বিভিন্ন ক্যাডারের দপ্তর-অধিদপ্তরের পদসমূহে প্রশাসন ক্যাডারের পদায়ন অযৌক্তিক ও বেআইনি। এতে সংশ্লিস্ট দপ্তরের সেবার মান বিঘ্নিত হয়, কাজের গতি হ্রাস পায়, প্রশাসনিক বিশুংখলা দেখা দেয়। এক ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে হবে।
তারা বলেন, জনবান্ধব ও জনগণের সরকার নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব বৈষম্য দূর করার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সেক্ষেত্রে আমরাও সরকারের সঙ্গে থেকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার এই কর্মযজ্ঞে সরকারকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030231475830078