সিজারের দুই বছর পর  স্কুলশিক্ষিকার পেটে মিলল কাঁচির অংশ!

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

স্কুলশিক্ষিকা হাবিবা আক্তারের সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে দুই বছর আগে। কুমিল্লা সদর হাসপাতালের তৎকালীন গাইনি চিকিৎসক ডা. রায়হানা সুলতানা বেগম ওই অপারেশন করেন। ওদিকে সিজারের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের মা হওয়ার মাস দুয়েক পর থেকেই হাবিবার পেটে ব্যথা হতে থাকে। এ নিয়ে আবারও গাইনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তাঁকে ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া হয়। ওষুধে ব্যথা কিছুটা কমলেও আবার বেড়ে যায়। এরপর হাবিবা আবার গাইনি চিকিৎসক রায়হানা সুলতানা বেগমের শরণাপন্ন হন। তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম করে কিছু না পেয়ে ব্যথানাশকই প্রেসক্রাইব করেন। এভাবেই কেটে যায় দুই বছর। এবার তিনি অন্য এক চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি এক্স-রে করে হাবিবার পেটের ভেতরে কোনো বস্তুর অস্তিত্ব খুুঁজে পান। তিনি রোগীকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তির জন্য পাঠান। সেখানে ইউরোলজি বিভাগে চার দিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অপারেশন করে হাবিবার শরীর থেকে কাঁচির হাতলের ভাঙা অংশ বের করা হয়।

সেই সঙ্গে অপসারণ করা হয় টিউমার। পরিষ্কার করা হয় কিডনিতে জমে যাওয়া পানি।

হাবিবা আক্তারের স্বামী কুমিল্লার কোটবাড়ি শালমনপুরের সাইদুজ্জামান ভূইয়া বাবু জানান, ২০১৪ সালের ১৬ জুন কুমিল্লা সদর হাসপাতালে সিজারের পর ২৩ জুন তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার দুই-তিন মাস পর থেকে তাঁর স্ত্রী পেটে ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। সঙ্গে বমি বমি ভাব এবং ঘাম দিয়ে জ্বর হতো। বাঁ পা ও তলপেটে ব্যথা হতো। গাইনি চিকিৎসক ডা. নুরুন্নাহারকে দেখানোর পরও কোনো ফল না পেয়ে আবার সেই গাইনি চিকিৎসক রায়হানা সুলতানা বেগমের কাছে নেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ২ আগস্ট তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানান জরায়ুর কাছে একটি টিউমার আছে।

সাইদুজ্জামান আরো জানান, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হলে ডা. রায়হানার স্বামী রেডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. আবুল কালাম আজাদ রোগীকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে প্রিন্ট দিলেও কোনো রিপোর্ট দেননি। ভর্তির ১০ দিন পর তাঁর স্ত্রীকে পাঠানো হয় ইউরোলজি বিভাগে। সেখানে হাবিবার দেহে অপারেশন করে টিউমার অপসারণ এবং জরায়ুর কাছ থেকে কাঁচির হাতলের ভাঙা অংশ বের করা হয়। আর এই কাঁচির ভাঙা অংশ পেটে থেকে যাওয়ায় হাবিবার বাঁ পাশের কিডনিতে পানি জমে যায়।

বর্তমানে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে কর্মরত ডা. রায়হানা সুলতানা বেগম বলেন, ‘হাবিবার এর আগেও দুটি সিজার হয়েছে। সর্বশেষ সিজারটা আমি করেছি। তাঁর শরীরে যে কাঁচির অংশ পাওয়া গেছে এ রকম কাঁচি সদর হাসপাতালে অপারেশনে ব্যবহার করা হয় না। উদ্ধার হওয়া অংশটি আগের সিজারের হতে পারে। আর বদলি হয়ে আমি সুনামগঞ্জে থাকলেও আমি তাঁর চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছি। ’

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান জানান, ডা. রায়হানা সুলতানা বেগম সম্প্রতি বদলি হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে কর্মরত। তবে কুমিল্লায় আসার জন্য তিনি আবেদন করে রেখেছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025269985198975