নওগাঁর মান্দায় সময় মত স্কুলে না আসা এবং স্কুলের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই শিক্ষকের নাম সেলিম মর্তুজা প্রামাণিক। তিনি উপজেলার কালিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
সময়মতো ক্লাসে উপস্থিত না থাকা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের টিন ও আম বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ছিলো। এ নিয়ে ৭ দিনের ব্যবধানে উপজেলা দুইজন শিক্ষক বরখাস্ত হলেন।
মঙ্গলবার ওই শিক্ষককে বরখাস্তের আদেশ পাওয়ার বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলে খোদা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দীক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সেলিম মর্তুজা প্রামাণিককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে, তিনি বিধিমোতাবেক তিনি খোরপোষ ভাতা পাবেন।
এ নিয়ে এক সপ্তাহে দুইজন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এর আগে ‘শিষ্টাচার বহির্ভূত’ আচরণের অভিযোগে গত ১০ মে বরখাস্ত করা হয় উপজেলা নহলা কালুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মকলেছুর রহমানকে। বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে পারসিমলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে।
বরখাস্তকৃত শিক্ষক সেলিম মোরতুজা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত টিন ও আম বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষে সঙ্গে আমি কখনও অসদাচরণ করিনি।
তিনি দাবি করেন, তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। এরপরও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফজলে খোদা ও একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আতাত করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করায় বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান। সঠিকভাবে তদন্ত করা হলে প্রকৃত সত্য পাওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি দাবি করেন, একই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হলেও প্রধান শিক্ষক ফজলে খোদাকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
কালিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলে খোদা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, সহকারী শিক্ষক সেলিম মোরতুজার আচার আচরণ ভাল নয়। তিনি বিদ্যালয়ের অনেক টাকা আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে আসা-যাওয়া করেন না। এসব বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। এরপর বিধিগত প্রক্রিয়ায় তাকে বরখাস্ত করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষক সেলিম মোরতুজার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে সত্যতা মিলেছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার পর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।