দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর অবশেষে ৩৭ বছর আগে হারানো বন্ধুর খোঁজ পেয়েছেন জার্মানপ্রবাসী মহিরুদ্দিন। খোঁজ পাওয়া বন্ধুর নাম হারুনুর রশিদ ওরফে হারেজ (৬৫)।
তিনি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামালদিয়া গ্রামের মৃত আ. মাজেদ শেখের ছেলে। বর্তমানে তিনি ১ ছেলে ও ১ মেয়ের বাবা। কামালদিয়া গ্রামের বাড়িতেই থাকেন তিনি। শনিবার (৪ মার্চ) বিকালে হারুনুর রশিদের খোঁজ মিলে।
এর আগে ‘৩৭ বছর আগে হারানো বন্ধুকে খুঁজতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন’ এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে।
প্রতিবেদনে লেখা হয়, ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জার্মানির ডর্টমাউন্ড শহরে হারুনুর রশিদের সঙ্গে পরিচয় হয় মহিরুদ্দিনের। এরপর হঠাৎ হারিয়ে যান হারুন। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর সেই বন্ধুর খোঁজে একটি জাতীয় দৈনিকে হারানো বিজ্ঞপ্তি দেন মহিরুদ্দিন।
‘সাক্ষাৎ চাই’ শিরোনামের ওই বিজ্ঞপ্তিতে ফুটে ওঠে বন্ধুকে দেখার আকুতি।
বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, ‘আমি মহিরুদ্দিন ১৯৮৬/৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জার্মানির ডর্টমাউন্ড শহরে অবস্থানকালে হারুনুর রশিদ/শেখ রশিদ নামে একজন সেখানে ছিল। যথাসম্ভব তার বাড়ি ফরিদপুর জেলার মধুখালী। ওই সময়ের পর থেকে অনেক চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। তোমাকে দেখার খুব ইচ্ছে। তাই ফোন নম্বর- ০১৭৩৪৩০৬৭৮৬ তে যোগাযোগ করলে বা কেহ সন্ধান দিলে খুব খুশি হব। সাক্ষাৎপ্রার্থী মহিরুদ্দিন। ’
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দুদিনের মাথায় হারানো বন্ধুর খোঁজ মিলল। গণমাধ্যমের খবর ও পত্রিকার সেই বিজ্ঞাপন দেখেই হারুনুর রশিদের সন্ধান দেন তার ভাতিজা মো. মহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি ওই ব্যক্তি যাকে খুঁজছেন তার বাড়ি মধুখালী। তখন আমার চাচাকে সংবাদ দেখাই। তিনি পড়ে বলেন, আমিই তার সেই হারিয়ে যাওয়া বন্ধু। আমরা এখন ওনার পুরোনো বন্ধু মহিরুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।
হারুনুর রশিদ শেখ বলেন, আমি জার্মানির ডর্টমাউন্ড শহরে থাকতাম। আমার পাসপোর্টে নাম ছিলো শেখ রশিদ। আমরা ওখানে তিন বন্ধু থাকতাম। আমার পাসপোর্ট জটিলতার কারণে পুলিশের ঝামেলায় পড়ি। জেলও খাটি। আমার দুই বন্ধু আমাকে জেলেও দেখতে আসে। এরপর ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে জার্মানি থেকে দেশে চলে আসি। আমার যতোটুকু মনে পড়ে মহিরুদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামে। আমিও তাকে অনেক খুঁজেছি, চিঠি লিখেছি। কিন্তু দীর্ঘ ৩৭ বছরেও তার কোনো খোঁজ পাইনি। আমার ভাতিজা মো. মহিদুল ইসলাম আমাকে বিষয়টি জানায়। আমার এখন পুরোনো সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কামালদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়ালিদ হাসান মামুন বলেন, যতটুকু জানতাম হারুনুর রশিদ অনেক বছর আগে জার্মানি থাকতেন। তবে তাদের এই বন্ধুত্বের সম্পর্কটি যে এতো আন্তরিক জানা ছিল না। এটা সমাজে বিরল। এ বিষয়ে আমার কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সর্বাত্মক চেষ্টা করব।