‘আপনি জিন্দিগিতে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পাবেন না’

নিজস্ব প্রতিবেদক |

“আপনি জিন্দিগিতে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পাবেন না, আপনি কেন ছাত্রলীগ নেতাকে দিয়ে কাগজ পাঠিয়েছেন, আপনাকে তো বলেছিলাম আমাদের সাথে  সরাসরি যোগাযোগ করতে।” ময়মনসিংহের নান্দাইলের দেউলাডাঙ্গা দারুল উলুম দাখিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত সুপার সিদ্দিকুর রহমানকে টেলিফোনে এমনই হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মচারী আকতার হোসেনের বিরুদ্ধে। 

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে অবসরে গিয়ে অবসর ‍ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকার জন্য আবেদন জমা দেয়ায় কিছুদিন পর থেকে একাধিক ব্যক্তি ফোন করেন অবসরপ্রাপ্ত এই সুপারকে। সব ফোনের একই বক্তব্য, “স্যার আপনার আরও কিছু কাগজ জমা দিতে হবে, আর আমাদের সাথে যোগাযোগ না করলে টাকা পেতে কয়েক বছর ঘুরতে হবে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাড়াতাড়ি টাকা পাবেন।”  টাকা চাওয়ার এ বিষয়টি সিদ্দিকুর রহমান তার দূর সম্পর্কের ভাতিজা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা শাহজাহান কবির সুমনকে জানান। সুমনকে অনুরোধ করেন তিনি যেন কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধার অফিসে গিয়ে বাকী কাগজগুলো জমা দিয়ে আসেন ও সদস্য-সচিবদের একটু অনুরোধও করেন। 

আরও পড়ুন: 

কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা লুটকারী সদস্য-সচিবের বাসায় চেক!

কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা: কোন শিক্ষক নেতা কত মেরেছেন

শাহজাহান কবির সুমন দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, প্রায় এক বছর আগে শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমানের আবেদন জমার সিরিয়াল নম্বরগুলো অবসর ও কল্যাণট্রাস্টের কর্তাদের হাতে দিয়ে আসি। এরপরও কল্যাণট্রাস্ট থেকে আবারও আমার চাচার কাছে ফোন যায় আরও কাগজ চেয়ে, আবারও যোগাযোগ করতে বলে।

ছাত্রলীগের সাবেক এই ত্যাগী নেতা শাহজাহান কবির বলেন, গত ২৪ জুন দুপুরে আমি নিজেই কল্যাণট্রাস্টের অফিসে যাই তাদের চাহিদামতো কাগজ নিয়ে কিন্তু আকতার হোসেন আমাকে দেখে বললেন দশ মিনিট পরে আসতে। আমি আধাঘন্টা পরে আবার সেই কাগজ দিতে গেলে রেগে গিয়ে আকতার আমাকে বলেন, ‘আজকে আর কাগজ জমা নেয়ার সময় নেই, পরে আসেন।’  এরপর আকতারে সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। 

আকতার টেলিফোন করে সেই আবেদনকারী সুপার সিদ্দিকুর রহমানকে বলেন, “আপনি জিন্দেগীতে কল্যাণের টাকা পাবেন না। আপনি কেন ছাত্রলীগ নেতাকে পাঠিয়েছেন। আমাদের কাছে ছাত্রলীগের ওইসব নেতার কোনও পাত্তা নেই।”  

আরও পড়ুন: অবসর-কল্যাণের টাকা পেলেন না, বিনা চিকিৎসায় শিক্ষকের মৃত্যু

শাহজাহান কবির বলেন, আকতারের ব্যবহারে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণট্রাস্টের অফিসে গেলেই অবসপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও হয়রানি করার অভিযোগ পুরনো। শতশত শিক্ষক দূর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। আমি আকতারের অপকর্ম নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সংগঠনের কয়েকজন সিনিয়র ভাই অনুরোধ করলেন না করার জন্য। 

আরও পড়ুন: বিনা চিকিৎসায় শিক্ষকের মৃত্যুর খবরে তোলপাড়: অবসর সুবিধার টাকা দেয়ার উদ্যোগ

শাহজাহান সুমন বলেন, অবসরে যাওয়ার একমাসের মধ্যে যেন সবাই কল্যাণট্রাস্টের টাকা পান। এখান থেকে যেন কোনো শিক্ষকের কাছে টেলিফোন না যায়। চাঁদার হার ২ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ করার পর কল্যাণট্রাস্টের ফান্ডে প্রতিমাসে জমা হয় প্রায় ৩৬ কোটি টাকা আর শিক্ষকদের দিতে হয় প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। সহজ হিসেব, কল্যাণট্রাস্টে এখন আর কোনও ঘাটতি নেই। তাহলে শিক্ষকরা কেন এখনও বছরের পর টাকার জন্য ঘুরবেন?   

আকতার হোসেনের মতামত জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004371166229248