অবসরের পরও এমপিওর কাজ করছেন শিক্ষাভবনের পরিচালক

মুরাদ মজুমদার |

অবসরে যাওয়ার পরও দিব্যি অফিস করছেন, এমপিওভুক্তির ফাইল দেখছেন দুর্নীতির দূর্গখ্যাত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের খন্দকার মো: রেজাউল করিম। ২৯ ডিসেম্বর সহকারি পরিচালকের (মাধ্যমিক-২) পদ থেকে তিনি অবসরে যান। কিন্তু অবসরে গেলেও এমপিওর ফাইল দেখছেন, সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন, সই করছেন ব্যাকডেটে। এমপিওর দালাল ও দুর্নীতিবাজ কর্মচারী স্বঘোষিত প্রধান সহকারি মাহবুব হোসেন ও সরকারি স্কুল শাখার মমিনুলকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে কাজ করছেন। এমনকি অবসরজনিত শূন্য হওয়া ওই পদে নতুন কারো পদায়নও ঠেকিয়ে রেখেছেন রেজাউল গংরা। অবসরের সাতদিনেও তার নেমপ্লেটটিও সরানো হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচছুক একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী দৈনিকশিক্ষাকে জানান, শিক্ষাভবনকেন্দ্রিক জামাত-শিবির চক্রের মাধ্যমে সাতমাস আগে মানিকগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসারের পদ থেকে শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক পদে পদায়ন বাগান রেজাউল। এতে সহায়তা করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিএনপিমনস্ক একজন অতিরিক্ত সচিব ও শিক্ষা অধিদপ্তরের জামাতপন্থী একজন উপ-পরিচালক।

অবসরে যাওয়ার পরও নিয়মিত অফিস করা নিয়ো কানাঘুষা চলছে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে। তারা বলছেন, অতীতে দেখা গেছে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তারা কিছু অতি প্রয়োজনীয় কাজ বুঝিয়ে দেয়ার জন্য অফিসে আসলেও তারা নির্দিষ্ট ওই চেয়ারটিতে না বসে টেবিলের উল্টোদিকে চেয়ারে বসে কাজ সেরে চলে যান। কিন্তু অবসরের সাতদিনেও রেজাউল তার সাবেক অফিস কক্ষের চাবিটাও হস্তান্তর করেননি। নিজেই চাবি দিয়ে তালা খুলছেন। এমপিও দালালচক্র নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই দরজা বন্ধ করে কাজ করছেন।

আজ ৪ জানুয়ারি (বুধবার) সরেজমিন দেখা যায় রেজাউল করিম নিজ হাতে চাবি দিয়ে তার কক্ষটি খুলে প্রবেশ করছেন। বসছেন। ফাইল দেখছেন। [ছবিতে দেখা যাচ্ছে]

৪ জানুয়ারি দুপুরে তোলা ছবি: দৈনিকশিক্ষাডটকম।
৪ জানুয়ারি দুপুরে তোলা ছবি: দৈনিকশিক্ষাডটকম।

 

দুপুর দু’টায় দৈনিকশিক্ষার এক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, “এমপিওর কয়েকটি ফাইলে কিছু কাজ বাকী ছিলো সেগুলোই করছেন। ”

অবসরে গিয়েও আপনি অফিস করছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কাচুমাচু করেন নিম্নস্বরে বলেন, “দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছি।”

কাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন? আপনার কক্ষে তো দেখা যাচ্ছে দুইজন এমপিও দালাল ও একজন অফিস সহকারি মাহবুব ও পিওন মমিনুলকে? দৈনিকশিক্ষার এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি রেজাউল।

জানা যায়, রেজাউল মূলত একজন সরকারি স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক। মানিকগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন প্রায় পাঁচ বছর। অবসরে যাওয়ার একমাস আগে তিনি সরকারি টাকায় ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন সিঙ্গাপুর থেকে। একজন বিদায়ী পরিচালককে প্রশিক্ষণে পাঠানোর জন্যও তদবির করেও মন্ত্রণালয়ের ওই বিএনপিমনস্ক অতিরিক্ত সচিব।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একে এম এনামুল হক শামীম গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের বিএনপিমনস্ক ওই অতিরিক্ত সচিব ও অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে টেলিফোনে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে সরকার চালায় আওয়ামী লীগ। শিক্ষা প্রশাসনের পদে বসে আওয়ামী লীগ মনস্ক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুটিবাজি করলে বা জামাত শিবিরের স্বার্থ দেখা উচিত হবে না।

মানিকগঞ্জে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা থাকাকালে খন্দকার রেজাউলের বিরুদ্ধে অবৈধ এমপিওভুক্তির অভিযোগের তদন্ত করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো: আবদুল্লাহ আল মামুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049469470977783