অতিরিক্ত ক্লাসের চাপে ব্যাহত হচ্ছে বেরোবি শিক্ষকদের গবেষণা

বেরোবি প্রতিনিধি |

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষক-সংকট চরমে পৌঁছেছে। অতিরিক্ত ক্লাস-পরীক্ষার চাপে গবেষণা কার্যক্রমে যথেষ্ট সময় দিতেন পারছেন না শিক্ষকরা। ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম। শিক্ষকের পদ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) আবেদন করলেও এখনো নতুন নিয়োগের আভাস পায়নি কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। এর বিপরীতে শিক্ষক আছেন ১৮৮ জন। অর্থাৎ প্রতি ৪২ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক। এর মধ্যে শিক্ষাছুটিতে আছেন ২৮ জন শিক্ষক। ১৬০ জন শিক্ষক দিয়েই চলছে পাঠদান। এ হিসাবে ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ১ জন শিক্ষক।

জানা গেছে, বৈশ্বিকভাবে একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১: ২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য অন্তত একজন শিক্ষক থাকবেন। জাতীয় পর্যায়েও দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এ মানদণ্ড অনুসরণে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে সে লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে রয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। সংকটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকদের ওপর ক্লাস-পরীক্ষার অতিরিক্ত চাপ পড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চার বছর মেয়াদে আট সেমিস্টারের স্নাতকে পড়ানো হচ্ছে ন্যূনতম ৪৮টি কোর্স এবং এক বছর মেয়াদের দুই সেমিস্টারের স্নাতকোত্তরে পড়ানো হয় ন্যূনতম ১২-১৪টি কোর্স। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় এক শিক্ষককে নিতে হচ্ছে ৮-১০টি কোর্স। কিছু বিভাগে তারও বেশি; বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, লোকপ্রশাসন, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গবেষণাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমেও প্রভাব পড়ছে।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদ বলেন, ‘শিক্ষক-সংকটের জন্য প্রধানত একাডেমিক ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকদের যেমন ব্যক্তিগত গবেষণার জায়গা থাকে, তাঁদের নিজেদের পড়াশোনার জায়গা থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত কয়েক বছরে শিক্ষকদের কোনো পদ চাওয়া হয়নি। ফলে বর্তমান উপাচার্যের ওপর এর প্রভাব পড়েছে। তবে খুব দ্রুত এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শিক্ষক চাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-সংকট আছে। শিক্ষকের পদ চেয়ে এরই মধ্যে ইউজিসিতে আবেদন করেছি। পদ পেলে নিয়োগ দেওয়া হবে আশা করছি।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ - dainik shiksha প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা - dainik shiksha ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ - dainik shiksha বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ - dainik shiksha ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে - dainik shiksha নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে - dainik shiksha আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034890174865723