রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ক্যাপ্টেন মো. ইয়ামিন আলীকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকালে পাংশা সরকারি কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পাংশা সরকারি কলেজ চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল সহ বের হয়ে কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারক লিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে পেশ করেন।
স্মারকলিপিতে অধ্যক্ষ ইয়ামিন আলীর বিরুদ্ধে যেসমস্ত অভিযোগ উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষ ইয়ামিন আলী যোগদানের পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচারণ, স্বেচ্ছাচারিতা ও সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে কলেজের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করেছেন।
এছাড়াও কলেজের কতিপয় চাটুকার শিক্ষক ও ছাত্রলীগের কয়েকজন ক্যাডারের মাধ্যমে সাবেক এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিমের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছেন। ভর্তি এবং ফরম পূরণের ক্ষেত্রে কোন প্রকার রশিদ ছাড়াই ২০০/- টাকা গ্রহণ করেন। অন্যান্য কলেজের তুলনায় বেশী ফি আদায়, খাত অনুযায়ী বিবরণযুক্ত রশিদ না দেয়া, টিউটোরিয়াল পরীক্ষার নামে রশিদ ছাড়া ২০০/- টাকা করে আদায়, পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রশিদ ছাড়া বার বার টাকা ও জামানত গ্রহণ করেন। কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি আওয়ামীলীগের নেতার মতো রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদান করতেন। জিয়াউর রহমান কোনো মুক্তিযুদ্ধ করেননি এবং তিনি মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়ে পাকিস্তান সরকারের গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন। তিনি একজন খুনী। বিএনপি ও জামায়াতের যথাযথ বিচার করা এবং তাদের পাকিস্তান পাঠিয়ে দেওয়া উচিত বলে বক্তব্য রাখেন।
অধ্যক্ষ ইয়ামিন আলী কলেজের রুটিন ও অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় জোহরের নামাজের কোনো বিরতি রাখতেন না। তিনি কলেজ মসজিদের মালামাল দখল করেছিলেন। অধ্যক্ষ ইয়ামিন আলী সর্বদা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। কলেজ ক্যাম্পাসের আম-কাঁঠাল নিজের খাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। কলেজের পুকুরে নিজের ভোগের জন্য বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করতেন। তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে একাধিকবার পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এবং বদলীর আদেশও হয়। যা তিনি সাবেক এমপি জিল্লুল হাকিমের প্রভাব খাটিয়ে তা স্থগিত করেন। তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-কর্মচারী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যেকারণে তিনি প্রায় এক মাস যাবত কলেজে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এ বিষয়ে পাংশা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষ মহোদয়ের একক আধিপত্য, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তার অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভে নেমেছে। তার অনুপস্থিতির কারণে কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে এবং মাস্টাররোলে কর্মরতরা বেতন ভাতা তুলতে পারছে না। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা কঠিন হতে পারে। তাই তিনি এ বিষয়ের সুষ্ঠু সমাধান চান।