অধ্যক্ষ মিন্টু বর্মণ খুনের নেপথ্যে কলেজের মুনাফা

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সাভারের আশুলিয়ায় রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন মিন্টু চন্দ্র বর্মণ। কলেজের আয়ের ভাগাভাগি নিয়ে অংশীজন দুই শিক্ষকের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। এর জের ধরে শিক্ষক আবু মোতালেবের ইন্ধনে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন অন্য শিক্ষক রবিউল ইসলাম রবি। হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেন রবির ভাগ্নে মো. আ রহিম বাদশা। সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্টু চন্দ্র বর্মণ হত্যা মামলার চার্জশিটে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. রাশেদুল ইসলাম দুই শিক্ষকসহ ৩ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন। অভিযোগ প্রমাণে চার্জশিটে ৪৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলো রবিউল ইসলাম রবি, রহিম বাদশা ও আবু মোতালেব।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, মোতালেবের ইন্ধনে আসামি রবি ও বাদশা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ, আসামিদের জবানবন্দি ও লাশের ময়নাতদন্তের পর্যালোচনা অনুযায়ী, তাদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড ৩০২/২০১/৩৪ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।

টাকা দিয়ে মোতালেব বলেন, যা করার করেন: ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি চালু হয়। মিন্টু চন্দ্র বর্মণ অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়ের লাভের অংশ নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। মোতালেব ও রবিউল মিলে মিন্টু চন্দ্র বর্মণকে সরানোর পরিকল্পনা করে। আবু মোতালেব ঈদুল আজহা পালনের জন্য বাড়ি যাওয়ার আগে রবিউলকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বলে, ‘আমি ঈদের জন্য বাড়ি যাচ্ছি, আমি বাড়ি থাকতে যা করার করেন।’

হত্যা মিশনে রহিম ও রবি: ২০২১ সালের ১৩ জুলাই রাতে রবি ও রহিম বাদশা তাকে হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরে স্কুলের শহীদ মিনারের পাশে গর্ত করে দুই হাত, দুই পা এবং শরীরের মোট ৫টি টুকরো রাতের অন্ধকারে মাটিচাপা দেয় এবং রাজধানীর দক্ষিণ খান থানাধীন এলাকার একটি কচুরিপানা ও পানিভর্তি ডোবায় খণ্ডিত মাথাটি পলিথিনে ভরে ফেলে দেয়। 

আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারের পর ২০২১ সালের ১০ আগস্ট রবি ও রহিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়। ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসান আসামি রবি এবং ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান শিকদার আসামি বাদশার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। ওই দিন অন্য আসামি আবু মোতালেবের সাত রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বর্তমানে আসামিরা কারাগারে।

মামলার বাদী দীপক চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘দ্রুত বিচার শেষ করে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমাদের চাওয়া জড়িত সবার ফাঁসি হোক।’

ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মতিউর রহমান বলেন, অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণ হত্যা মামলায় ৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে র‌্যাব। আগামী ২৯ ডিসেম্বর বাদীর উপস্থিতিতে চার্জশিটের বিষয়ে শুনানি হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের - dainik shiksha হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস - dainik shiksha নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর - dainik shiksha অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002979040145874