নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অপদস্থ করার ঘটনায় আরেক তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর নাম রায়হান শেখ (১৯)। তিনি ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
আজ শুক্রবার বিকেলে চারটার দিকে নড়াইল সদর উপজেলার হবখালী এলাকা থেকে পুলিশ রায়হানকে গ্রেফতার করে। রায়হান অধ্যক্ষের মোটরসাইকেলসহ তিন শিক্ষকের মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে পুলিশ জানায়, এই নিয়ে অধ্যক্ষকে অপদস্থ করার ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় গত ২৭ জুন পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৭০-১৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত (ওসির দায়িত্বে) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন অধ্যক্ষের মোটরসাইকেলসহ তিন শিক্ষকের মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখে দেখা যায়, রায়হান মোটরসাইকেলগুলোতে আগুন দিচ্ছেন। তিনি সদর থানায় আছেন। আগামীকাল শনিবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করেছিলেন তিন তরুণ। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজন গ্রেফতার হয়েছেন। একজন পলাতক।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করা হয়। এর আগের দিন ১৭ জুন ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিজের ফেসবুকে ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে প্রণাম জানিয়ে ছবিসহ একটি পোস্ট দেয়। এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হলে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস কলেজশিক্ষক, ওই শিক্ষার্থীর বাবা ও কলেজ পরিচালনা পরিষদের কয়েকজন সদস্যকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে শিক্ষার্থীকে তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ সদস্যরা ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে নিয়ে যেতে চাইলে উত্তেজিত ছাত্র ও বহিরাগত কয়েকজন বাধা দেন। তখন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়।
বিকেল চারটার দিকে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং ওই শিক্ষার্থীকে কলেজের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে বের করা হয়। নিচতলার কলাপসিবল গেটের সামনে আনার পর তাঁদের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়।