অধ্যক্ষের 'নির্যাতন' থেকে রক্ষার দাবি শিক্ষক-কর্মচারীদের

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি |

সাতক্ষীরার শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ অধ্যক্ষের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. শাহিদুজ্জামান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি কলেজের সকল শিক্ষক কর্মচারী। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ থেকে বর্তমান কলেজ অধ্যক্ষ মো. ফজলুর রহমান নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ক্রমশ প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অধ্যক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরোধীতা করায় শিক্ষক-কর্মচারীরা মিথ্যা মামলাসহ অত্যাচার নির্যাতনে দিশেহারা।

তিনি আরও বলেন, অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকে অদ্যাবধি কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিটই হয়নি, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর মতো। কলেজ উন্নয়নে তার কোনও দৃষ্টি না থাকলেও বৈধ-অবৈধভাবে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে তার জুড়ি মেলা ভার। কলেজের চৌহদ্দি বাড়ানোর কথা বলে জমি ক্রয়ের নামে বার বার নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা নিয়েও অদ্যাবধি তা পূরণ হয়নি।নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা তাদের সেই অনুদানের কথা লিখিত আকারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। সরকারের শিক্ষা বিভাগের কাছ থেকে বহুতল বিশিষ্ট বিল্ডিং নির্মাণের নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। কলেজে তার অনিয়মিত যাতায়াতের কারণে প্রশাসন যন্ত্র ভেঙ্গে পড়েছে, দিন দিন কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নতুন নতুন অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষকের সংখ্যা। 

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত অবৈধ অধ্যক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হলেও স্বৈরতান্ত্রিকভাবে সব কাজ করে যাচ্ছেন। অর্থলোলুপ শিক্ষাদস্যু এই অধ্যক্ষ কতটা অর্থ পিশাচ-যার প্রমাণ দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে যাদের সাথে চাকরি করেছেন, যারা ২৫ বছর অধ্যাপনা জীবনে একটিবার প্রমোশন পেয়েছেন, এমন ১৪ জন প্রভাষকের কাছ থেকে ঘুষ নিতেও কুন্ঠিত হননি। 

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, অধ্যক্ষ ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কার্যক্রম শেষে তার নিয়োগ অবৈধ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২১ মার্চ তাকে অবৈধ ঘোষণা করে পত্র জারি হয় এবং অবৈধভাবে উত্তোলিত ৪০ লাখ টাকা ফেরৎ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে গভর্নিং বডির সভাপতি প্রিন্সিপালের আপন ভগ্নিপতি হওয়ায় সেই আদেশ বাস্তবায়িত করেননি বরং তিনি (অধ্যক্ষ) গায়ের জোরে, অবৈধভাবে কলেজের সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন।

এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আমরা বিভিন্ন সময়ে কলেজের সাবেক গভর্নিং বডির সভাপতি তার আপন ভগ্নিপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেনের কাছে আবেদন করি কিন্তু তিনি বিষয়টি আমলে নেননি। পরবর্তীতে বর্তমান সভাপতি গোলাম মোরর্শেদের দারস্থ হই, তিনি পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পরে এমপি মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন বললেও অদ্যাবধি কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তার এই অপকর্মকে ধামাচাপা দিতে তিনি অত্যন্ত সুচতুরভাবে তার দুজন সহকর্মীকে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়েছেন। কারণ সেই দুইজন তার অপকর্মের বিরুদ্ধে সর্বদা স্বোচ্চার। তার বিপক্ষে অবস্থানকারীকে এক এক করে দেখে নেবেন বলে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে আসছেন। 

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষাদস্যুর হাত থেকে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং তাদের রক্ষার দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057060718536377