রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের বাসভবনে (কলেজ ডরমেটরি) বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে তাতে কেউ হতাহত হয়নি। এ ঘটনায় অপরাধীদের বিচারের দাবিতে আজ সোমবার সকালে কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে কে বা কারা এই ঘটিয়েছে, তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
এদিকে এ ঘটনায় পাংশা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) জন্য আবেদন করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মো. ইয়ামিন আলী। তিনি বলেন, গতকাল রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে বিকট শব্দে পরপর দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। তাতে আতঙ্কিত হয়ে ঘরের বেলকনিতে এসে দেখেন পুরো কম্পাউন্ড ধোঁয়ায় আচ্ছাদিত। শব্দ শুনে তাৎক্ষণিকভাবে কলেজ ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা বের হয়ে আসে। এক সপ্তাহ আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিল।
একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৪ জুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন মো. ইয়ামিন আলী। তিনি এই কলেজে যোগদানের পর থেকে প্রায় সব ক্ষেত্রে কড়াকড়ি নিয়ম চালু করেন। তাতে অনেকের মাতব্বরি চলে গেছে। কিছু শিক্ষকের অবৈধ আয় বন্ধ হয়ে গেছে। তাতে কিছু শিক্ষক খুব্ধ হয়েছেন। এ কারণে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. তৈয়েবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ও মনজুরুল ইসলাম স্যার কলেজে ছিলাম। বিকট শব্দের পর অধ্যক্ষ স্যারের ফোন পেয়ে দ্রুত আমরা সেখানে যাই। সেখানে আগুন জ্বলা অবস্থায় বোমার বিভিন্ন ধ্বংসাবশেষ পাই। এ সময় কলেজ ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৬০-৭০ জন উপস্থিত ছিল।’
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রভাষক মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বর্তমান অধ্যক্ষ স্যার আসার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এটা যাদের সহ্য হচ্ছে না, আমরা মনে করি তারাই এই হামলা তারাই ঘটিয়েছে। তারাই অরাজকতার মাধ্যমে কলেজের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ধ্বংস করতে চায়।’
বাংলা বিভাগের প্রভাষক ও কলেজের শিক্ষক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিব শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘এই হামলা মানে কলেজের পবিত্রতাকে কলুষিত করা। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলকে জানিয়েছি।’
রাজবাড়ী জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।