অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ

পিরোজপুর প্রতিনিধি |

পিরোজপুরের নাজিরপুরে সুধাংশু শেখর হালদার টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে প্রভাষক ও কর্মচারী পদে ১৪ জনকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউএনওসহ কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্য সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে জানা যায়। কলেজের অধ্যক্ষ মাখন লাল দাস এসব জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

এ ছাড়া অধ্যক্ষ মাখন লালের বিরুদ্ধে কলেজের এফডিআরের ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগসহ একই সময় দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় শোভন সুতার ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও প্রতিকার না পেয়ে শোভন ৭ অক্টোবর কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কলেজটি প্রতিষ্ঠার পরে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও রফিকুল ইসলামসহ কমিটির অন্য সদস্যরা ২০০৪ সালের ৩ জুন নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রভাষক ও কর্মচারী পদে ৯ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করে রেজুলেশন করেন। পরে ২০১২ সালের ২ জুলাই মাখন লাল দাসকে ওই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। ওই সময় মাখন নেছারাবাদ উপজেলার পশ্চিম সোহাগদল শহীদ স্মৃতি বিএম কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পরও তিনি দুই প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন এবং সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করেছেন।

এ ছাড়া কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির জন্য ২০০৪ সালের ৩ জুন যে ৯ জনের নিয়োগ

চূড়ান্ত করে রেজুলেশন করা হয়েছিল, ওই তারিখ ঠিক রেখে নিয়োগ বোর্ডের সব সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে ৯ জনের পরিবর্তে প্রভাষক-কর্মচারী পদে ১৪ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করে নতুন রেজুলেশন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠান। জাল কাগজপত্রে এমপিওভুক্ত হওয়া অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করছেন।

২০১০ সালের ১০ অক্টোবর কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি অনুমোদন করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে রাখা হয় কৃষ্ণকান্ত মল্লিক ও সুব্রত কীর্তনীয়াকে। অথচ ওই সময় তারা কেউই ওই কলেজের শিক্ষক ছিলেন না।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মাখন লাল দাস বলেন, আমি ২০১২ সালের ৪ জুলাই এখানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করলেও ছুটি নিয়ে আগের প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেছি এবং বর্তমান প্রতিষ্ঠানে আমার নামে যে বেতন-ভাতা এসেছে, তা আমি উত্তোলন না করে ফেরত দিয়েছি। এ ছাড়া ৯ জন বা ১৪ জন নিয়োগ চূড়ান্ত করার সময় এখানে কর্মরত ছিলাম না। তবে একই তারিখের দুটো রেজুলেশন আমি পেয়েছি। ১৪ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা রেজুলেশনটি ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে। ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর অনুমোদিত কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির দুই শিক্ষক প্রতিনিধি ওই সময় কলেজের শিক্ষক ছিলেন না। কমিটি অনুমোদনের পরে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এফডিআর বিষয়ে তিনি বলেন, এফডিআর যেভাবে ছিল, সেভাবেই রয়েছে।

কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও ওবায়দুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030980110168457