দ্রুত প্রবীণ হতে থাকা পরিস্থিতির সামাল দিতে চীন ধীরে ধীরে অবসরের বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। চীনের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র বিশেষজ্ঞের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয়-পৃষ্ঠপোষকতার গ্লোবাল টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
চায়নিস অ্যাকাডেমি অব লেবার অ্যান্ড সোস্যাল সিকিউরিটি সায়েন্সের সভাপতি জিন ওয়েগ্যাং জানিয়েছেন, অবসরের বয়স বাড়ানোর জন্য চীন একটি প্রগতিশীল, নমনীয় এবং ব্যতিক্রমধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে শুরুতে অবসরের সীমা কয়েক মাস বাড়ানো হবে। তারপর ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকবে।
গ্লোবাল টাইমসের খবরে বলা হয়, 'যারা এখন অবসর বয়সের কাছাকাছি আছে, তাদের অবসর মাত্র কয়েক মাস বিলম্বিত করা হবে। আর অপেক্ষাকৃত তরুণরা আরো কয়েক বছর কাজ করবে। তবে এর মধ্যেই তারা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।
পত্রিকাটি জানায়, লোকজনকে তাদের পরিস্থিতি এবং অবস্থার আলোকে অবসর গ্রহণের সুযোগ দেয়া হবে।
চীন অবশ্য এখনো অবসরগ্রহণের বয়স পরিবর্তন করেনি। দেশটিতে পুরুষদের জন্য অবসরের সর্বনিম্ন বয়স ৬০ বছর, অফিসার শ্রেণীর নারীদের জন্য ৫৫ বছর এবং কারখানায় চাকরি করেন এমন নারীদের জন্য ৫০ বছর।
চীনের নতুন প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বলেছেন, সরকার বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবছে।
চীনের বর্তমান জনসংখ্যা ১৪০ কোটি। তাদের জনসংখ্যা কমছে, বুড়িয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হলো ১৯৮০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত থাকা এক সন্তান নীতি। এর ফলে এখন পেনশনের চাপ বাড়ছে।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন ধারণা করছে, ২০৩৫ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ চীনের ৬০-উর্ধ্ব লোকের সংখ্যা ২৮০ মিলিয়ন থেকে বেড়ে হবে ৪০০ মিলিয়ন, যা ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার সমান।
চীনে গড় আয়ু ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দ ছিল ৪৪ বছর। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে তা হয়েছে ৭৮ বছর। ২০৫০ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ তা বেড়ে হবে ৮০ বছর।
বর্তমানে প্রতিটি অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সহায়তার জন্য পাঁচ শ্রমিককে অবদান রাখতে হয়। এক দশক আগের চেয়ে তা অর্ধেক। ২০৩০ সাল নাগাদ তা হতে পারে একজনের জন্য চারজন, ২০৫০ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ একজনের জন্য দুজন।
সূত্র : টিবিএস নিউজ