অবসরের ২১ দিন আগে শিক্ষককে শাস্তিমূলক বদলি, শিক্ষা প্রশাসনে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দুর্নীতির দূর্গ-খ্যাত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রতিহিংসাপরায়ণ ও জামাতপন্থী কর্মকর্তারা পরিকল্পিতভাবে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের কাজ করেই চলছে। তাদের সর্বশেষ আক্রোশের শিকার হয়েছেন সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন সহকারি অধ্যাপক। তার অপরাধ তিনি একজন আত্তীকৃত শিক্ষক।  অবসরে যাওয়ার মাত্র ২১ দিন আগে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে এই শিক্ষককে । একই দিনে ব্যবস্থাপনা বিভাগের আরেকজন শিক্ষককে মুক্তাগাছা থেকে জয়পুরহাট বদলি করা হয়েছে অথচ তার বদলির সময়ই হয়নি।  এসব নিয়ে শিক্ষা প্রশাসনে তোলপাড় চলছে। 

দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের সহকারি অধ্যাপক মো: হুমায়ুন কবিরকে ১৫ নভেম্বর ময়মনসিংহে বদলি করা হয়েছে। অথচ বিভাগ পরিবর্তন করে বদলি করার এখতিয়ারই নেই অধিদপ্তরের। শুধু তা-ই নয়, বদলির জন্য আবেদন করেনি হুমায়ুন। অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়েছে জনস্বার্থে তাকে বদলি করা হয়েছে। অবসরে যাওয়ার ২১ দিন আগে নিজ এলাকা চূয়াডাঙ্গা থেকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় বদলির মধ্যে কোনে জনগণের কী স্বার্থ লুকানো আছে তা জানতে চায় শিক্ষকরা। 

কান্না বিজড়িত কন্ঠে একজন ভুক্তভোগী শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, অবসরে যেতে চেয়েছিলাম নিজ এলাকার কলেজ থেকে। এতটুকু আশাও পূরণ হচ্ছে না। শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে গুলিবিদ্ধ, মাতাল, জুয়াখোড়, জামাতপন্থী, দুর্নীতিবাজ, বউ পিটিয়ে জেল খাটা ও ব্যাচেলর কর্মকর্তাদের বিদায় করতে না পারলে শেখ হাসিনার সব অর্জন বিফলে যাবে। 

প্রতিহিংসামূলক বদলির আদেশ বাতিল করতে ইতিমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন শিক্ষকরা। সারাদেশে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন শিক্ষকরা। তারা অবিলম্বে প্রতিহিংসার বদলির আদেশ জারিতে দায়ী কর্মকর্তাকে অধিদপ্তর থেকে সরিয়ে দূরের কলেজে বদলির দাবী জানিয়েছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত ‘মাতাল অবস্থায় গুলিবিদ্ধ’ একজন জামাতপন্থী কর্মকর্তা এই বদলির আদেশ জারির জন্য দায়ী বলে শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন। কয়েকবছর আগে পাঁচ তারকা হোটেলের ডিজে পার্টিতে অতিরিক্ত মদ পান করে বেসামাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে মাতলামির এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধি হন এই জামাতপন্থী কর্মকর্তা। গত বছর ৪০/৫০ জন ‘মর্যাাদাবান’ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে নিয়ে বেসরকারি অধ্যক্ষ রতনের বাড়ীতে মাইক্রোবাসে করে একাধিকবার যাতায়াতের অভিযোগ গুলিবিদ্ধ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে রতন মজুমদারের আশীর্বাদ হঠাৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এখন আবার থেমেছে। কারণ, কদিন আগেই এ রতন মজুমদার হেফাজত নেতা বাবুনগরীর কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছে রেহাই পেয়েছে। সাম্প্রদায়িক ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন রতন। সেই রতন এখন দেশ ছেড়ে বাড়ৈ সিন্ডিকেট প্রধান বাড়ৈর কাছে চলে যাওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছে বলেও জানা যায়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা গত কয়েক সপ্তাহের বদলির আদেশগুলোতে প্রতিহিংসা, টাকার খেলা ও বেছে বেছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের শায়েস্তা করা হয়েছে। যারাই স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমর্থক তাদেরকে বিপদে ফেলা হয়েছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040111541748047