অভিভাবকের দুর্নীতি : সরকারি স্কুলে নির্বাচিত হয়েও বাদ ২৩৬ শিক্ষার্থী

বগুড়া প্রতিনিধি |

আবেদনের বিধিভঙ্গ ও লটারিতে বাদ পড়ায় বগুড়া জিলা স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে সরকারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের নাম প্রকাশের পরই এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষকদের ভাষ্য, অভিভাবকরা আবেদন প্রক্রিয়ায় ‘কূটকৌশলের’ আশ্রয় নিয়ে একাধিকবার আবেদন করায় এমনটি ঘটে। অনেক অভিভাবক ভুল স্বীকার করে এখন সমাধানের উপায় খুঁজছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে শতাধিকবার আবেদন জমা পড়েছে পাঁচজনের। এর মধ্যে প্রভাতি শাখায় এক ভর্তিচ্ছুর নামে আবেদন পড়ে ১৫৬ বার। দিবা শাখায় দুই শিক্ষার্থীর আবেদন পড়ে যথাক্রমে ১২৪ ও ১১০ বার করে। এ ছাড়া প্রভাতি শাখায় ৩৩ জনের ১ হাজার ৪০৫টি আবেদন এবং দিবা শাখায় ৩৫ জনের আবেদন জমা পড়েছে ১ হাজার ১২০ বার। অন্যদিকে বগুড়া জিলা স্কুলে ভর্তির নির্বাচিত ২৫ জন শিক্ষার্থীর নামে কোনো আবেদনই জমা পড়েনি। এ ছাড়া এক শিক্ষার্থীর নামে ৭৭ বার আবেদনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অনেক শিক্ষার্থীর নামে ৩০ থেকে ৪০ বারও আবেদন করা হয়েছে।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, বগুড়া শহরের দুটি সরকারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ডিজিটাল লটারিতে নাম ওঠা ৪১১ জনের তালিকা থেকে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে মাত্র ১৫৩ জন। একাধিকবার আবেদন জমা দেওয়া এবং বয়স বেশি বা কম হওয়ার জন্য নতুন করে বাদ পড়েছে ২৩৬ জন। এ নিয়ে মোট বাদপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা হলো ২৫৮ জন।

গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া জিলা স্কুলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অভিভাবকরা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামপদ মুস্তাফী ও সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিত-ায় জড়িয়ে পড়েন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি নিয়ে বগুড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামপদ মুস্তাফী বলেন, মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আবেদনের ত্রুটির কারণে নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীদের বাতিল গণ্য করেছি। ভর্তির জন্য জালিয়াতির সুযোগ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বাবা-মা এসে ঝামেলা সৃষ্টি করছেন। আমরা শুরু থেকেই বলে এসেছি, লটারির বিষয়টি আমাদের এখতিয়ার নয়। বিষয়টি সরাসরি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের। সবকিছু তাদের নির্দেশেই হচ্ছে।

জিলা স্কুল সূত্র বলছে, ‘বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রায় ১১ হাজার ৪০০ জন শিক্ষার্থীর আবেদন এসেছিল। এদের মধ্যে ২০৬ (প্রভাতি ও দিবা) জনকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এক শিক্ষার্থীর আবেদন একাধিকবার থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি। যারা জালিয়াতির সুযোগ নিয়েছে তাদের বাতিল করে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের ভর্তি করে নেওয়া হবে। সূত্রটি জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকে ত্রুটিপূর্ণ ৫৪ জনকে বাছাই করা হয়েছে। এরই মধ্যে তাদের বাতিল করা হয়েছে। গতকাল সকালে নতুন করে আরও তিনজনকে পাওয়া গেছে।

এদিকে বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থান নেন। সেখানে আলোচনা শেষে তাদের ডিসি অফিসের মাধ্যমে মাউশির কাছে একটি আবেদন করতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেরপুর উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক অভিভাবক বলেন, ‘ছেলেকে জিলা স্কুলে ভর্তি করাতে আমি ১০ বার আবেদন করেছিলাম। তার নাম লটারিতে তিনবার এসেছে। বিষয়টি আমার উচিত হয়নি। কিন্তু এখন আমরা এটার সমাধান চাই।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056989192962646