অভিযুক্ত এক লাখ ৩২ হাজার ব্যক্তির দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দুর্নীতিবাজ ও হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিসহ নানা অভিযুক্ত প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার ব্যক্তির দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তারা আকাশ, স্থল ও নৌ-পথে যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ে ও কমছে। কেউ গ্রেপ্তার হলে সংখ্যা কমে। আবার নতুন করে কোন ব্যক্তি মামলার আসামি হলে তালিকায় নাম বেড়ে যায়।

এই ধরনের অভিযুক্তদের তালিকা, তাদের নাম, ঠিকানা, ছবি, পাসপোর্ট, এনআইডিসহ অন্যান্য তথ্য দেশের বিভিন্ন চেকপোস্টে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে পাসপোর্টধারী আছেন ৬৫ হাজার। আর পাসপোর্ট নম্বর ছাড়াও অনেক অভিযুক্তের নাম তালিকায় রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সারাদেশে হত্যা, খুন, চাঁদবাজি, আর্থিক কেলেঙ্কারি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদসহ বিভিন্ন মামলার অভিযুক্তদের তালিকা প্রতিদিন করা হয়। অভিযুক্তদের ডাটা বেইস তালিকা তৈরি করে ২৪ ঘণ্টা তাদেরকে নিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে।

অভিযুক্তদের ছবি, পাসপোর্টসহ তাদের সব তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার ডাটা সার্ভারে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের চেকপোস্টগুলোতে ছবিসহ ডাটা রয়েছে। অভিযুক্তরা দেশ ছাড়ার জন্য বিমানবন্দরে গেলে তাদের পাসপোর্ট কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর তল্লাশি করতে গেলে ডাটা সার্চ দিলে তাদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এমন অভিযুক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়। অনেক অভিযুক্তকে আইনের হাতে সোপর্দ করা হয়। আবার সন্দেহভাজন দেশ থেকে কোন তালিকাভুক্ত ব্যক্তি দেশে প্রবেশের চেষ্টা করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্ভারে তালিকায় তাদের নাম থাকলে তাদেরকে আটক করা হয়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া (কালো তালিকাভুক্ত) ব্যক্তিদের সাময়িক বিদেশ যাওয়া আসার ওপর কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। দেশের ভিতরে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুঁজছে। তাদেরকে ধরার জন্য অভিযান চালানো হয়। কিন্তু অভিযানের কারণে তারা ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে পালিয়ে থাকেন। অবশেষে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজতে যান। আবার কেউ কেউ সাজার ভয়ে নানা কৌশলে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আগে পালিয়ে যাওযা সহজ হলেও এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজধানীর মালিবাগ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান কার্যালয় থেকে আকাশ পথ, নৌ পথ, রেল পথ ও স্থল পথে সম্প্রতি আরও বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

ঢাকার জজ কোর্টের অপরাধবিষয়ক আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, মামলার পলাতক অভিযুক্তরা যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে তার জন্য বাদী পক্ষের আইনজীবী কিংবা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে আদালত বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপর তার নাম ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজপত্র আইনি প্রক্রিয়ায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। আদালতের আদেশের ভিত্তিতে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে চেকপোস্টে পাঠানো হয়। আধুনিক প্রযুক্তির কারণে তারা ধরা পড়েন।

অভিযোগ রয়েছে, অনেক দাগি আসামি বিভিন্ন সময় স্থল পথে বা চোরাই পথে অপরাধ করে বিদেশে পালিয়ে যায়। আবার নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেকেই দেশে আসার চেষ্টা করবে। যার কারণে সম্প্রতি দেশের তিনটি বিমানবন্দর ও বেনাপোল স্থল বন্দরসহ অন্যান্য বন্দরে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে বাড়তি নজরদারিও।

সূত্র জানায়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চেকপোস্টগুলোতে সর্বক্ষণ পালাক্রমে বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। কেউ অবৈধভাবে যাওয়ার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়। এরপর বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য পাসপোর্টের বিভিন্ন তথ্য ও এনআইডির তথ্য যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হয়।

জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক পলাতক দাগি আসামি, বা তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নির্বাচনের আগে দেশে ফিরে এসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারে। এই জন্য দেশের সীমান্ত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় রয়েছে। এমনকি সমুদ্র পথে যাতে কেউ পালাতে না পারে তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নানা বেশে কাজ করছেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দাগি অপরাধীদের তৎপরতা চিহ্নিত করতে কাজ করছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা - dainik shiksha শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি - dainik shiksha ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032620429992676