দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: রাজধানীর নিউ বেইলি রোডে কোজি কটেজ ভবনে আগুনে মারা যাওয়া অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল নাম বৃষ্টি খাতুন। সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম বৃষ্টি খাতুন। তার বাবার নাম শাবলুল আলম সবুজ। গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বনগ্রামে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিবারের সদস্য ও বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ।
বৃষ্টির বাবা শাবলুল আলম সবুজ ও মা বিউটি বেগমও ইসলাম ধর্মের অনুসারী। তবে বৃষ্টির বায়োডাটায় দেখা গেছে তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী।
বৃষ্টির মা বিউটি বেগম ও তার খালা সাবানা খাতুন বলেন, বৃষ্টি কবে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছে জানি না। সে মুসলিম পরিবারের মেয়ে। তার লাশ আমরা গ্রামের বাড়িতে দাফন করব। বৃষ্টি যতই ভুল করুক না কেন, আমাদের সন্তান আমরা দাফন করব।
তামিম নামে বৃষ্টির এক আত্মীয় জানান, বৃষ্টি ধর্মান্তরিত হয়েছিল।
তবে বৃষ্টির ছোট বোন শারমিনা সুলতানা ঝরনা বলেন, আমার বোন মনেপ্রাণে একজন মুসলিম। সে কখনোই নিজ ধর্ম ত্যাগ করেনি। তবে সম্প্রতি তার বোন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে ফেসবুক আইডি খুলেছিলেন। ওই নামেই সাংবাদিকতা করতেন বলে স্বীকার করেন ঝরনা।
ঝরনা বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে মায়ের সঙ্গে বৃষ্টির শেষবার মুঠোফোনে কথা হয়। বৃষ্টি সাংবাদিকতা করলেও বাড়ি থেকে মা টাকা পাঠাতেন। বড় বোনের মৃত্যুতে তাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।
৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ বলেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল নাম বৃষ্টি। সে মুসলিম।
এদিকে, শুক্রবার বিকালে অভিশ্রুতির গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মেয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য মা বারবার মাতম করছেন।
গ্রামের বাড়ি থাকেন বৃষ্টির মা বিউটি বেগম ও ছোট বোন দশম শ্রেণির ছাত্রী বর্ষা। বাবা শাবলুল আলম সবুজ রাজধানীতে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। বৃষ্টি খাতুন সবার বড়। তার মেজ বোন শারমিনা সুলতানা ঝরনা রাজবাড়ী সরকারি কলেজে প্রথমবর্ষের ছাত্রী।
বৃষ্টির বাবা শাবলুল আলম সবুজ বলেন, কর্তৃপক্ষ শনিবার সকালে লাশ বুঝে দেবে বলেছিল। কিন্তু ক্লিয়ারেন্স বা লাশ কিছুই দেওয়া হয়নি।
রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা অভিশ্রুতি শাস্ত্রীকে হিন্দু দাবি করেন। তিনি লাশ মুসলিম বাবার কাছে দিতে বাধা সৃষ্টি করছেন। তিনি আরও দাবি করেন,
অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ৮-৯ মাস ধরে মন্দিরে যাতায়াত করছেন, পূজা করছেন। সে সূত্রেই তার সঙ্গে পরিচয়। অভিশ্রুতি জানিয়েছিলেন, তার মা-বাবা বেনারসে থাকতেন। তারা মারা যাওয়ায় দাদুর হাত ধরে ঘটনাচক্রে তিনি ছোটবেলায় কুষ্টিয়ায় এসেছিলেন। অভিশ্রুতির দাদু মারা গেলে একটি পরিবার তাকে দত্তক নেয়। তবে এ পরিবার মুসলিম না হিন্দু ছিল, তা তিনি বলেননি।বৃষ্টি ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে পড়েছেন গ্রামের বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার ইডেন কলেজে দর্শন শাস্ত্র নিয়ে পড়ছেন।