কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক রতন কুমার সাহাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হচ্ছে। ২ কোটি ৪০ লাখ ১২ হাজার ৯০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি হচ্ছে। রোববার দুর্নীতি দমন কমিশন সভায় এ মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান ও কলেজের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর কাজী জাহাঙ্গীর আলম।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, সপ্তম বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তা রতন কুমার সাহা ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে খাতভিত্তিক আর্থিক আয়-ব্যয় নির্বাহ করা হয়ে থাকে। অধ্যাপক রতন কুমার সাহা ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন। ওই সময় তিনি আগের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবু তাহেরের কাছ থেকে কলেজের ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মোট স্থিতি ৭ কোটি ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৭২৮ টাকা বুঝে নেন। রতন কুমার সাহার সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে ২০১৯ সালের ৩ মে তাকে ওএসডি করা হয়। এরপর একই বছরের ১১ জুন পরবর্তী অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া। তিনি যখন দায়িত্ব নেন, তখন কলেজের ব্যাংক হিসাবগুলোর স্থিতি পাওয়া যায় ৫ কোটি ৫৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৬ টাকা।
জানা গেছে, অধ্যাপক রুহুল আমিন ভূঁইয়া ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেওয়ার পর কলেজের পাঁচ শিক্ষক সমন্বয়ে একটি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করেন। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষা তহবিল, উন্নয়ন তহবিল, ল্যাবরেটরি তহবিল, অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারী তহবিলসহ উল্লেখযোগ্য ২২টি খাতের আয়-ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখে, এগুলোতে বিল-ভাউচার নেই, এমনকি ব্যয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা কমিটির রিকুইজিশনও ছিল না। মালপত্র গ্রহণ বা বিতরণের প্রমাণ নেই এবং বিধি অনুযায়ী ক্রয়/ব্যয় হয়নি।
এদিকে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গঠিত আরেকটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক রতন কুমার সাহা, তৎকালীন হিসাবরক্ষক আব্দুল হান্নান এবং ক্যাশিয়ার কাজী জাহাঙ্গীর আলমের পরস্পর যোগসাজশে ২ কোটি ৪০ লাখ ৯২ হাজার ৯০৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে বেরিয়ে আসে। এরপরই বিষয়টি অনুসন্ধানে মাঠে নামে দুদক। দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাত অনুসন্ধান করেন।