দেশের অর্থনীতির গভীরতা নেই, সামান্য বাতাসেই কেঁপে ওঠে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি এ মুহূর্তে চাপের মধ্যে আছে। মূল্যস্ফীতির অবস্থা ভয়াবহ। বিদ্যুৎ সংকট চরম। অর্থাৎ অর্থনীতির গভীরতা তৈরি হয়নি। এ কারণে সামান্য বাতাসেই কেঁপে ওঠে। গভীরতা থাকলে হাওয়া কম লাগে। এ অবস্থা থেকে অর্থনীতির গভীরতা বাড়াতে হবে। ‘রাজা মুদ্রা’ অর্থাৎ ডলারের আয় বাড়াতে হবে।
বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশের অর্থনীতি নিয়ে সংক্ষেপে নিজের এ মূল্যায়ন তুলে ধরেন তিনি।
জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্রের (এনএসডিএস) সংশোধন এবং হালনাগাদকরণ সংক্রান্ত এ কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির গভীরতা বাড়ানোর জন্য কিছু কৌশল অনুসরণ করতে হবে। সরকার সে কাজটাই করছে। কিছু কৌশল ঠিক করা হয়েছে। খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন করতে হবে। কৌশলগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে-মার্কিন ডলার অধিক পরিমাণে আয় করা। সব ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হওয়া। ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। প্রতিটি টাকা ব্যয় করে কী পাওয়া গেল তা মূল্যায়ন করা। গুরুত্ব বোঝাতে মন্ত্রী অর্থনীতি, কাজ ও বাহুল্য পরিহার–এ তিনটি শব্দ তিনবার করে উচ্চারণ করেন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এতে বিশিষ্ট অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক। সভাপতিত্ব করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন।
পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা সংক্রান্ত যেকোনো নীতি সিদ্ধান্ত গ্রহণে পরিসংখ্যান প্রধান অস্ত্র। এজন্য কাজ সমাপ্তির পর মূল্যায়নটাও জরুরি। এনএসডিএসের স্বাধীন মূল্যায়নের ব্যবস্থা করার জন্য বিবিএসকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
আলোচনায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান রাজনৈতিক ব্যাপার। তবে বিবিএস স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবেই কাজ করে। মূল্যস্ফীতি যতটুকু বাড়ে ততোটুকুই প্রকাশ করা হয়। এনএসডিএসের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজেও অর্থায়ন করার জন্য বিশ্বব্যাংক কান্ট্রি ডিরেক্টরকে অনুরোধ জানান তিনি।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের পরিসংখ্যানে আরও সুশাসন থাকা প্রয়োজন। বিভিন্ন দেশের ভালো চর্চার অনুসরণ, পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং কার্যকর কৌশল প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে এ উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
উম্মুক্ত আলোচনায় ইকোনোমিক রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ড. সাজ্জাদ জহির বলেন, বিদেশি ঋণের টাকাসহ প্রতিটি ব্যয়ের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে হবে।