ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রভাষক পদের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে অশোভন আচরণের অভিযোগে এক শিক্ষককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। আগামী ১০ দিনের মধ্যে লিখিত আকারে তাকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বোর্ডে অশোভন আচরণের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন নিয়োগ বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ বোর্ডের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বোর্ডের সদস্য হিসেবে অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান নিয়োগ বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্য অধ্যাপক ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামানের সঙ্গে অযৌক্তিক ও অশোভন আচরণ করেন। ড. আবু সাদেক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ আনেন।
অভিযোগগুলো হলো ড. বখতিয়ার অভিযোগকারীসহ নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নকারী অন্য সদস্যদের বিভিন্নভাবে অবমূল্যায়ন করে তাঁদের অপমান করেছেন, বোর্ডের সভাপতি এবং উপউপাচার্য যখন টেবুলেশনের মাধ্যমে লিখিত, একাডেমিক ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর একত্র করছিলেন, তখন অভিযুক্ত তা অবিশ্বাস ও আদবের বরখেলাপ ঘটিয়ে সদস্যদের ঘাড়ের ওপর দিয়ে সন্দেহের চোখে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, যা চূড়ান্ত বিবেচনায় অশোভন আচরণ; নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা যখন পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় প্রভৃতি স্থানধারী নির্ধারণ করে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানধারীকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ সুপারিশের জন্য মতামত প্রদান করেন, তখন অভিযুক্ত মেধাতালিকার শীর্ষ অবস্থানকারীদের বাদ রেখে রহস্যজনকভাবে তৃতীয় স্থানধারীকে নিয়োগ সুপারিশ করার জন্য জোর করতে থাকেন।
এ ছাড়া ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রায় বিভিন্ন স্তরে (প্রশ্ন করা, খাতা দেখা, মৌখিক পরীক্ষা নেয়া, পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করা) উপস্থিত থেকে স্বাক্ষর প্রদান করলেও চূড়ান্ত নিয়োগ সুপারিশের কাগজে তিনি (ড. বখতিয়ার হাসান) স্বাক্ষর না করে সভা থেকে অশোভনভাবে বেরিয়ে যান।
এর আগে গত বছর ৩০ অক্টোবর ২৫৬তম সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় সিন্ডিকেটে ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আলোকে গত ২৩ নভেম্বর ঘটনার সত্যতা প্রাথমিকভাবে খতিয়ে দেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি ‘ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং’ কমিটি গঠন করে। এই কমিটির কাছে লিখিত বা মৌখিকভাবে অভিযুক্ত কোনো বক্তব্য প্রদান করেননি বলে কমিটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, ‘এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। যে অযৌক্তিক ও অশোভন আচরণের অভিযোগ তিনি (ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামান) করেছেন তেমনটি ওখানে কিছুই ঘটেনি। আশা করছি প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।’
অভিযোগকারী অধ্যাপক ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামান বলেন, ‘এটা অনেক আগের বিষয়। ওই সময় একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম।’