অসুস্থ না হয়েও সিক বেডে পরীক্ষা, বহি*ষ্কার ১

বাগেরহাট প্রতিনিধি |

চলছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা। বাগেরহাটের একটি কেন্দ্রে অসাধুপায় অবলম্বন ও সিক বেড বাণিজ্যের মাধ্যমে কিছু শিক্ষার্থীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার (১৯ জুন) ওই কেন্দ্র পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাফিজ আল আসাদসহ একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। 

এদিন ওই কেন্দ্রে সরকারি পিসি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অ্যাকাউন্টিং থিওরি, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ইন্ট্রোডাকশান টু বিজিনেস ও গণিত বিভাগের থিওরি অব নাম্বারস বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল।

জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, সোমবার (১৯ জুন) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা চলছিল। ওই পরীক্ষায় বাগেরহাটের খানজাহান আলী ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ২১৩নং কক্ষে অসুস্থ না হয়েও কিছু শিক্ষার্থী সিক বেডে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এমন অভিযোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে পরিদর্শনে যান। তখন ওই কক্ষে ২৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এ সময় অসাধুপায় অবলম্বনের দায়ে সিক বেডে পরীক্ষা দেওয়া এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। পরে নকল প্রতিরোধে পরীক্ষা চলাকালীন পুরো সময়ে সেখানে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু পরীক্ষা শেষে ওই কর্মকর্তা চলে গেলে, সিক বেডে পরীক্ষা দেওয়া কিছু বিশেষ শিক্ষার্থীকে লেখার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়।

এমন খবরে একজন সংবাদকর্মী সেখানে গিয়ে ওই অনিয়মের ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। তখন কয়েকজন শিক্ষক-পরীক্ষার্থী ওই সংবাদকর্মীকে আটকে ভিডিও মুছে ফেলতে চাপ প্রয়োগ করেন। এরই মধ্যে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে জড়ো হন অনেকে। 

সূত্র বলছে, ওই কেন্দ্রে অতিরিক্ত সময়ে পরীক্ষা দেওয়াদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তারা শিক্ষকদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিচ্ছিল। 

জানতে চাইলে, খানজাহান আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খোন্দকার আছিফ উদ্দিন রাখি বলেন, পরীক্ষা শেষে নিজ কক্ষে আমি টপসিট স্বাক্ষর করছিলাম। এমন সময় একটি কক্ষের কিছু শিক্ষার্থী তখনও খাতা জমা দেয়নি বলে জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে আমি খাতাগুলো জমা নেওয়ার নির্দেশ দেই। ওই ঘটনার সময় কলেজের সামনে একদল যুবক অবস্থান নিয়ে, ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া থেকে রক্ষা পায়। এ ঘটনায় কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোশারেফ হোসেন ও অর্থনীতি বিভাগের জৈষ্ঠ্য প্রভাষক হেমায়েত হোসেনকে নিয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, সেখানে সিক বেডে পরীক্ষায় নকল হচ্ছিল বলে শুনছিলাম। তাৎক্ষণিকভাবে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেন। পরীক্ষা শেষ হওয়া এবং খাতাপত্র জমা নেওয়ার পরে ম্যাজিস্ট্রেট চলে আসে। পরে আবার শুনতে পাই ওখানে আবার উত্তরপত্র সরবরাহ করেছে এবং নির্ধারিত সময়ের পরে আরও পরীক্ষা দিয়েছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাফিজ আল আসাদ ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট (এনডিসি) মোহাম্মাদ মোজাহারুল হককে পাঠানো হয়। তারা সেখানে সবার স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আসছেন। তারা মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদন পেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025260448455811