অ্যাপ জটিলতায় আটকা ৪২ লাখ শিক্ষার্থীর ফল

রুম্মান তূর্য |
চলতি বছর নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা করা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৪২ লাখের অধিক শিক্ষার্থীর বার্ষিক মূল্যায়নের ফল আটকে আছে। গত ৩০ নভেম্বর মূল্যায়ন কাজ শেষ হলেও এখনো এ দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করতে পারেনি স্কুলগুলো। শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের তথ্য সংরক্ষণ ও ট্রান্সক্রিপ্ট-রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুতের অ্যাপ নৈপূণ্যে তথ্য অন্তর্ভুক্তিতে জটিলতায় ষষ্ঠ শ্রেণির সাড়ে ২০ লাখ ও সপ্তম শ্রেণির সাড়ে ২১ লাখ শিক্ষার্থীর ফল দেয়া যায়নি।
 
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, এই জটিলতা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সার্ভারে যাতে চাপ কম পড়ে সেজন্য মূল্যায়নের তথ্য এন্ট্রি ও ট্রান্সক্রিপ্ট-রিপোর্ট কার্ড ডাউনলোডের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ফল প্রকাশ শুরু হতে পারে। 
 
নৈপূণ্য অ্যাপে তথ্য অন্তর্ভুক্তির জটিলতা নিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তা ও শিক্ষা বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমে ‘মূল্যায়নের তথ্য এন্ট্রিতে শিক্ষকদের ঘুম হারাম’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তারপর বিষয়টি আমলে নিয়ে জটিলতা এড়াতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের তথ্য এন্ট্রি ও রির্পোট কার্ড-ট্রান্সক্রিপ্ট ডাউনলোডের সময় বেঁধে দেয়া হয়। 
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। 
 
এদিকে গত বৃহস্পতিবার মূল্যায়নের রিপোর্ট কার্ড ডাউনলোড করতে সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা ও তথ্য এন্ট্রিতে দুপুর একটা থেকে সারারাত সময় দেয়া হলেও এতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। গতকাল শনিবার অধিদপ্তর জানিয়েছে, সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত শিক্ষকরা রিপোর্ট কার্ড, বিষয়ভিত্তিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও আচরণিক ট্রান্সক্রিপ্ট ডাউনলোড করতে পারবেন। রাত আটটার পর থেকে শিক্ষকরা মূল্যায়নের তথ্য এন্ট্রি করতে পারবেন। তবে রাত আটটার পর রিপোর্ট কার্ড, বিষয়ভিত্তিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও আচরণিক ট্রান্সক্রিপ্ট ডাউনলোড বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের রিপোর্ট কার্ড ডাউনলোড করার আগে অবশ্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সব তথ্য দিতে হবে। প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকের সব তথ্য সংশোধনের সুযোগ চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সংশোধন করে হালনাগাদ করতে হবে। তাহলে রিপোর্ট কার্ডে সব তথ্য সঠিকভাবে দেখতে পারবেন।
 
শিক্ষকরা বলছেন, গত ১ ডিসেম্বর থেকে তথ্য এন্ট্রি শুরু হলেও কাজ সব কাজ শেষ হয়নি। নৈপূণ্য অ্যাপের সার্ভার সিস্টেমে প্রবেশ করলে বলা হচ্ছিলো, সব প্রসেস ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করতে বলা হয়। আবার তথ্য এন্ট্রি করলেও তা হারিয়ে যাচ্ছিলো। তাই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করা যায়নি। 
 
শিক্ষকরা আরো বলছেন, অনেকেই অ্যাপ ঠিকমত ব্যবহার করতে পারছেন না। বিশেষ করে মফস্বলের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। এ অবস্থায় প্রশিক্ষণে শিক্ষকদের এই অ্যাপ ব্যবহার ও তথ্য এন্ট্রি নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হলে আগামীতে জটিলতা হয়তো কম হবে।
 
রাজধানীর একটি খ্যাতনামা স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, মূল্যায়নের অ্যাপ জটিলতা কমাতে তথ্য অন্তর্ভুক্তি ও রিপোর্ট কার্ড ডাউনলোড ও তথ্য অন্তর্ভুক্তির সময় আলাদা করে দেয়া হয়েছে। সেভাবে আমরা তথ্য অন্তর্ভুক্তি ইতোমধ্যে শুরু করেছি। আশা করছি ২৮ তারিখ ফল প্রকাশ করতে পারবো। 
 
অপর এক প্রধান শিক্ষক বলেন, তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা যাচ্ছে। বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রিষ্ট ধর্মসহ কয়েকটি বিষয়ে বিষয়-শিক্ষক নৈপূণ্য অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা বাকি আছে। এ কাজগুলো শেষ হলে ফল প্রকাশ করা যাবে। 

 

 

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003201961517334