রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুঠিয়ার বিড়ালদহ উচ্চবিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক কোরমান আলী পালিয়ে শৌচাগারে আশ্রয় নিয়ে আত্মরক্ষা করেন। পরে ৯৯৯-এ ফোন করা হলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
প্রধান শিক্ষক কোরমান আলী বলেন, গতকাল ক্লাস চলাকালে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ দলবল নিয়ে অফিসকক্ষে হাজির হন। পরে তাকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে নির্দেশ দেন। স্বাক্ষর দিতে না চাইলে তিনি তর্ক শুরু করেন। একপর্যায়ে তাকে ধাক্কা দেন। এ সময় আব্দুস সামাদ ও তার লোকজন তার ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তিনি শৌচাগারে গিয়ে দরজা বন্ধ করে আত্মরক্ষা করেন। পরে ৯৯৯-এ ফোন দেওয়া হলে পুঠিয়া থানা-পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
তবে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অস্বীকার করে আব্দুস সামাদ বলেন, প্রায় ছয় মাস আগে ওই বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। নিয়মানুযায়ী দুই মাসের মধ্যে কমিটি গঠনের বিধান থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি তা মানছে না। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন চাচ্ছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে একটি অ্যাডহক কমিটি দিয়ে রেখেছে। আর
বিষয়টি জানতে গতকাল সকালে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে দুপুরের দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জরুরি কাজে রাজশাহী শহরে অবস্থান করছি। স্কুলে ঠিক কী হয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলতে পারব না।’
পুঠিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমীর হামজা বলেন, ৯৯৯-এ কল পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে অবরুদ্ধ থাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। পরে ওই শিক্ষক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাইরে আছি। ওই শিক্ষক থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দিয়েছে কি না, জানি না।’
উপজেলা মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুজ্জামান বলেন, গতকাল দুপুরে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনে গাফিলতির বিষয়ে স্থানীয় লোকজন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা আকতার জাহান বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষককে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।