বাস্তবায়ন অযোগ্য বিবেচনায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকার প্রবর্তিত বিতর্কিত নতুন শিক্ষাক্রম থেকে এরই মধ্যে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ঘোষণা দিয়েছে পরীক্ষা পদ্ধতি ও পাঠ্যবইয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধনের। নতুন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের বিভিন্ন সময়ে দেয়া বক্তব্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন নির্দেশনায় সংশোধনের কিছু বিষয় ইতোমধ্যে পরিষ্কারও হয়েছে। বিশেষ করে মাধ্যমিকের পাঠ্যবই সংশোধনের রূপরেখা অনেকটাই স্পষ্ট করা সম্ভব হয়েছে। তবে প্রাথমিকের পাঠ্যবই সংশোধনের বিষয়টি এখনো আলাপ-আলোচনার স্তরে রয়েছে। পুরো বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানতে উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন প্রাথমিকের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রাথমিক স্তরে যেহেতু চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে আসন্ন ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর ঘোষণা ছিলো, তাই এই দুই শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে খুব বেশী পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়বে না। কেননা, নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে এই দুই শ্রেণির পাঠ্যবই এখনো ছাপানো হয়নি। বর্তমানে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের কারিকুলাম অনুযায়ী চতুর্থ-পঞ্চমে পাঠদান চালু আছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের স্বার্থ রক্ষাকারী কিছু বিষয় বাদ দিলেই ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের কারিকুলাম অনুযায়ী এই দুই শ্রেণির জন্য আসন্ন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপালেই হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
কিন্তু, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম এরই মধ্যে অবাস্তব প্রমাণিত হয়েছে। তাই এই তিন শ্রেণির পাঠ্যবই সংশোধনের প্রয়োজনিয়তা প্রকট হয়ে উঠেছে।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রম চালুর আগে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে সর্বশেষ পরিমার্জন হয়েছিলো ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে। ওই পরিমার্জন থেকে আওয়ামী লীগ বন্দনা ও অপ্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত কিছু অধ্যায় বা পরিচ্ছেদ বাদ দিলেই হবে। সরকার সে পথেই এগুচ্ছে। এক্ষেত্রে পুরো পাঠ্যবই পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এনসিটিবির বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়াজুল হাসান এর আগে সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই তার তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনের বিষয়গুলো এগিয়ে নেয়া সহজ হবে।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই প্রতিষ্ঠানের কাজ সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং ও স্পর্শকাতর। সব মহলের মতামত ও অভিপ্রায়ের সমন্বয় সাধন খুবই কঠিন কাজ। তাই প্রতিষ্ঠানটিকে সব সময়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই চ্যালেঞ্জ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে সুচারুভাবে প্রাথমিকের পাঠ্যবই সংশোধনের ব্যাপারে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।