আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এস এ মালেকের দাফন সম্পন্ন

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এস এ মালেকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরোস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে এস এ মালেক মারা যান।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অজিত কুমার সরকার এ তথ্য জানিয়ে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যাসহ শরীরের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে গেছেন। এস এ মালেকের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা বুধবার বাদ জোহর রাজধানীর কলাবাগান মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় অংশগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও আগা খান মিন্টু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আখতারুজ্জামান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. আ ব ম ফারুক, বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুল ওয়াদুদ, বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. শামসুদ্দীন ইলিয়াস প্রমুখ।

জানাযা শেষে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে এস এ মালেকের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এর আগে এস এ মালেকের প্রথম নামাজে জানাজা বেলা ১২টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।

ডা. এস এ মালেক ৬ দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সব রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-১ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

প্রবেশিকা পর্যন্ত তিনি গ্রামের স্কুলে পড়াশুনা করেন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে খড়রিয়া ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে বাগেরহাট পিসি কলেজ থেকে আইএসসি ও ৫৮ খ্রিষ্টাব্দে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তী পর্যায়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। একজন সচেতন রাজনীতিক হিসেবে ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে এদেশের  সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এস এ মালেক সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অনুগত এস এ মালেক প্রথম জীবনে একজন আ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক, পরবর্তীতে একজন হোমিওপ্যাথি বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন।

১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলে ডা. এস এ মালেক সক্রিয় ভাবে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এ কারণে একপর্যায়ে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান গ্রহণ করতে বাধ্য হন। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ফিরে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদকে সুসংগঠিত করার কাজে মনোযোগ দেন।

এস এ মালেক ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ আগস্ট টাঙ্গাইলে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ আব্দুল রাজ্জাক তখন সেখানে বণবিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগের হাট জেলারফকির হাট থানার মূলঘর ইউনিয়নের সৈয়দমহল্লা গ্রামে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ - dainik shiksha ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো - dainik shiksha দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা - dainik shiksha ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061180591583252