আকার বাড়তে পারে মন্ত্রিসভার

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক:  সংসদ নির্বাচনে বড় জয়ের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে টানা চারবার প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা। এর আগে ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার তার নেতৃত্বে ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা শপথ নিয়েছে। বিদায়ী মন্ত্রিসভার আকার ছিল ৪৮ সদস্যের। নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দায়িত্বও বণ্টন করা হয়েছে। তবে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে এখনো পূর্ণ মন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, মন্ত্রিসভার আকার আরও বড় করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে এখনো অনেকে অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে এমন তথ্য মিলেছে।

গতকাল মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টনের প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে এবার এখনো পূর্ণ মন্ত্রী নিয়োগ দেননি প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী নিয়োগ করা হলেও সেখানে প্রতিমন্ত্রীর আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় এসব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রী ছিলেন।

সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ফাঁকা থাকা মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হবে। অর্থাৎ যেসব মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী আছেন, কিন্তু প্রতিমন্ত্রী নেই, সেখানে একজন প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হতে পারে। আবার যেখানে প্রতিমন্ত্রী আছেন, কিন্তু মন্ত্রী নেই; সেখানে মন্ত্রী নিয়োগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ফলে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর এমপিদের অনেকেই এখনো আশায় আছেন শেখ হাসিনা তাদের মন্ত্রিসভায় রাখবেন। তাদের আশা, তারা শপথের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ফোন পাবেন। তবে কখন তারা ডাক পাবেন, তা নিশ্চিত নয়। এটি একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই জানেন।

বিদায়ী মন্ত্রিসভায় বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন টিপু মুনশি। তিনি নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে নির্বাচিত আহসানুল ইসলাম টিটু। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কাউকে মন্ত্রী করা হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনকে বহাল রাখা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বাদ পড়েছেন। এখানে একজন প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে আগের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামকে বহাল রাখা হয়েছে। সেখানে এবার প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়নি। একজন প্রতিমন্ত্রী এই মন্ত্রণালয়ের সমবায় বিভাগের দায়িত্ব পেতে পারেন। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় সমাজকল্যাণে দুজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। নতুন মন্ত্রিসভায় শুধু মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে এ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সমাজকল্যাণেও একজন প্রতিমন্ত্রী হতে পারেন। সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। আগের সরকারে এ মন্ত্রণালয়ে দুজন দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার শুধু মন্ত্রী দেওয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রীর চেয়ারটি এখনো খালি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে একজনকে প্রতিমন্ত্রী করবেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে সাবের হোসেন চৌধুরীকে বসিয়েছেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। এই মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রী বসানো হতে পারে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে জুনাইদ আহমেদ পলককে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। আগে এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন মোস্তাফা জব্বার। এখানে একজনকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জাহিদ ফারুককে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। এ মন্ত্রণালয়ে একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রী করার সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বিদায়ী মন্ত্রিসভায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ছিলেন। তাকে এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেওয়া হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাউকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী করা হতে পারে। তবে না করলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। 

প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে, এবার সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগের ১৫ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ৯ জনকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া রংপুর বিভাগে দুজন, রাজশাহীতে দুজন, সিলেটে দুজন, ময়মনসিংহে দুজন, খুলনায় দুজন এবং বরিশাল বিভাগে দুজনকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছে। যেসব বিভাগ থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী কম করা হয়েছে, সেসব বিভাগ থেকে কারও কারও কপাল খুলতে পারে। মন্ত্রিসভা আরও বড় করবেন প্রধানমন্ত্রী, এটা অনেকটাই নিশ্চিত।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা - dainik shiksha পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম - dainik shiksha ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় - dainik shiksha এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো - dainik shiksha প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037360191345215