আগামী নির্বাচন হবে চ্যালেঞ্জের, নেতাকর্মীদের শেখ হাসিনা

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

নানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে আগামী নির্বাচনটা চ্যালেঞ্জের হবে জানিয়ে নেতাকর্মীদের সেভাবে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (৫ জুন) গণভবনে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচন, নির্বাচন একটা চ্যালেঞ্জ, কারণ নানা ধরনের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হয়।

যারা বাংলাদেশের বদনাম করে তাদের কুলাঙ্গার- আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জীবন যখন একটু উন্নত হয়, তখনই বাংলাদেশেরই কিছু কুলাঙ্গার আছে যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সব জায়গায় বদনাম করে বেড়ায়, মিথ্যা বলে বেড়ায়। আর কিছু আছে বিদেশি অনুদানের টাকা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাসই করেনি, যারা গণহত্যা চালিয়েছে, লুটপাট করেছে, নারী ধর্ষণ, নির্যাতন করেছে, তারা আছে, তাদের আওলাদ আছে, তারা সারাক্ষণ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেই যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতার সময় আমাদের সমর্থন করেনি, তাদের কাছেই তাদের সব আত্মীয়তা। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্য।

নির্বাচনে কারচুপি করা বিএনপির অভ্যাস মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ভোট চুরি করা এটাই তাদের রেকর্ড। গণতন্ত্র হরণ করা এটাই তাদের রেকর্ড। তো ওদের মুখে এখন আবার আমরা গণতন্ত্র শুনি।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা মিলিটারি ডিকটেটরের হাতে তৈরি দল, তাদের কাছে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। তাদের কাছে ভোটের কথা শুনতে হয়। তো চুরি করা যাদের অভ্যাস, সেই চোরদের কাছে বাংলাদেশের জনগণ কী শুনবে, কী দেখবে।  

তিনি বলেন, ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনেও তো কম কারচুপি হয়নি। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে এই খালেদা জিয়াকেই বাংলাদেশের মানুষ ভোটচুরির অপরাধে বিতাড়িত করেছে। আবার ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে নির্বাচনে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটচুরি করতে গেছে, তখনও জনগণের আন্দোলনেই তাদের বিদায় নিতে হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে দলটির প্রধান বলেন, আমাদের সংগঠনটা যথেষ্ট শক্তিশালী। সংগঠনটা যেন আরও মজবুত থাকে, ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ত্যাগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দিনের পর দিন কারাবরণ, অত্যাচার, নির্যাতন, তারপর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধ করে যুদ্ধাহত হয়ে বাংলাদেশের পুনর্গঠন কাজ- এখানে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চেষ্টা, স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে ফেলা, জয় বাংলা মুছে ফেলা, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে ফেলা, অনেক অপকর্মই করা হয়েছে। আসলে সত্য এক সময় না এক সময় উদ্ভাসিত হবেই। সত্য কেউ মুছে ফেলতে পারে না। আজ সেটাই হয়ে গেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। জয় বাংলা স্লোগান আবার ফিরে এসেছে।

বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আল্লাহর রহমতে এইটুকু করতে পেরেছি, এই ১৪ বছরে, ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে সরকারে আসার পর, এই একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই আজ বাংলাদেশের এই উন্নতিটা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা কিন্তু বাংলাদেশকে বদলে দিতে পেরেছি। আজ কিন্তু সেই ভিক্ষুকের জাতি বলে কেউ আর অবহেলা করতে পারবে না। এই জায়গাটা থেকে বাংলাদেশকে উত্তরণ ঘটিয়ে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের তৈরি হতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে। এটাকে আমাদের স্থায়ী করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, যেকোনো দুর্যোগে-দুর্বিপাকে আওয়ামী লীগই কিন্তু মানুষের পাশে থাকে। এটাও প্রমাণিত, যেকোনো সময় আওয়ামী লীগ মানুষের কাছে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বাইরে গেলে সবাই বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ে আমাকে বলে, আপনার ম্যাজিকটা কী। আমি বলি ম্যাজিক কিছু নাই ওখানে। আমার শক্তিশালী সংগঠন আছে। আর আমাদের সংগঠনের শক্তিশালী নীতিমালা আছে। আমাদের একটা লক্ষ্য আছে, একটা পরিকল্পনা আছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে, জনগণকে নিয়ে উন্নয়নের কাজ করি বলেই আমরা সাফল্য আনতে পেরেছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা - dainik shiksha শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি - dainik shiksha ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059812068939209