আজকের পরিস্থিতিতেও জাতীয় পার্টি আগের মতো সহযোগী হিসেবে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির নির্বাচনে আসা নিয়ে কোনো আশঙ্কা রয়েছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এরই মধ্যে স্পষ্ট করেছেন তারা নির্বাচন করার জন্য নমিনেশন জমা দিয়েছেন এবং নির্বাচন করবেন। আমিও বিশ্বাস করি তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভালো ফল করবেন। আর জাতীয় পার্টি আমাদের দীর্ঘদিনের সহযোগী। গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য তারা সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আজকের পরিস্থিতিতেও জাতীয় পার্টি আগের মতো সহযোগী হিসেবে কাজ করবে।
বিএনপির তথাকথিত অবরোধ কোথাও পালিত হয়নি দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নির্বানে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্যে ক্রমাগতভাবে গুপ্তস্থান থেকে অবরোধের ডাক দেয়া হচ্ছে। সেই অবরোধে দেশের মানুষের বিন্দুমাত্র সাড়া নেই।
দেশের মানুষের সাড়া তো নেই-ই, বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। দেশের মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। সেই কাজকর্ম ব্যাহত করতে ২৮ অক্টোবর থেকে ক্রমাগতভাবে গাড়িঘোড়ায় আগুন দেয়া হচ্ছে। গতকাল (১২ ডিসেম্বর) গাজীপুরে ট্রেনলাইনের ২০ ফুট কেটে দেয়া হয়েছে। এতে সাতটি বগি লাইনচুত্য হয়েছে, একজন যাত্রী নিহত ও অর্ধশত যাত্রী আহতসহ ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীতে কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, তাদের এই তথাকথিত অবরোধ কোথাও পালিত হয়নি। কিন্তু এ পর্যন্ত সাড়ে ৩০০ যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে। গাড়িতে আগুন দেয়া এ কোন রাজনীতি? পৃথিবীর কোথাও দেখিনি রাজনীতির নামে বাসে আগুন দেয়া হয়? গাড়িতে আগুন দেয়ায় এ পর্যন্ত সাতজন নিহত ও বহু মানুষ দগ্ধ হয়েছেন।
এ অপরাজনীতি অচিরেই বন্ধ হওয়া দরকার। এটা বন্ধ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। বিএনপি বলছে তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছে। গাড়িঘোড়া পোড়ানো কি গণতান্ত্রিক আন্দোলন? মানুষ পোড়ানো কি গণতান্ত্রিক আন্দোলন? এভাবে জনজীবন ব্যাহত করে জানমালের ক্ষতি করা কখনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন নয়। এগুলো দেশবিরোধী, সন্ত্রাসী, জনবিরোধী কর্মকাণ্ড। তারা যে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে এগুলো বর্বরতা, হিংস্রতা, যা হিংস্র হায়েনাকেও হার মানিয়েছে। তাদের এ অপরাজনীতি চিরদিনের মতো বন্ধ করতে হবে।
১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের পর শুধু নির্বাচন সংক্রান্ত সভা-সমাবেশ করা যাবে, অন্য কোনো সভা-সমাবেশ করা যাবে না, এ ধরনের একটি নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন নির্বাচন কমিশন নানা নির্দেশনা দিচ্ছে। এটি নিয়ে নানা বিচার-বিশ্লেষণ বা সিদ্ধান্ত সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নেবে। নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর প্রকৃতপক্ষে পুরো ক্যানভাসটাই তো নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের যে কোনো নির্দেশনা দেয়ার অধিকার আছে। সেক্ষেত্রে দেখতে হবে এতে সংবিধানিক অধিকারগুলো ক্ষুণ্ন হচ্ছে কি না সেটি দেখার বিষয়। তবে নির্বাচন কমিশনের যে কোনো নির্দেশনা দেয়ার এখতিয়ার আছে।