আনসার ব্যাটালিয়নকে ‘অপরাধী আটক, দেহ তল্লাশি ও মালামাল জব্দের’ প্রস্তাবিত ক্ষমতা বাতিলের সুপারিশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। এর আগে সংসদে উত্থাপিত বিলে এই ক্ষমতা আনসারকে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই ক্ষমতা বাতিল করে ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে।
গত ২৩ অক্টোবর ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩’ সংসদে তুলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। পরে বিলটি পরীক্ষা করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিলটি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এতে পুলিশ প্রধান, আনসার ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
যদিও বিলটি উত্থাপনের সময়েই জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম আপত্তি জানিয়েছিলেন। বিলটি উত্থাপনের পর পুলিশ ও আনসার বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একদিন পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, আনসারের ক্ষমতা আগের মতোই থাকবে।
সংসদে উত্থাপিত ওই বিলের ৮ ধারায় আনসার ব্যাটালিয়নকে আটক ও তল্লাশির ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। ওই বিলে বলা হয়েছিল, ‘কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্রমতো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি; কোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।’
বিলের এই ধারায় সংশোধনী আনার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ বৈঠক সূত্র জানায়, এই প্রস্তাবটি এসেছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
সংসদে উত্থাপিত বিলের ৭ ধারায় আনসার ব্যাটালিয়নের দায়িত্বের ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, জননিরাপত্তামূলক কোনো কাজে সরকার বা সরকারের অনুমোদনক্রমে সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী দায়িত্ব সম্পাদন করবে। সংসদীয় কমিটি এই ধারায় সংশোধন করে ‘দায়িত্ব পালনে সহায়তার’ কথা বলছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে আনসার বাহিনীতে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড উল্লেখ করা হয়েছিল। সংসদীয় কমিটি এক্ষেত্রে ‘মৃত্যুদণ্ড’ বাদ দিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবনের সুপারিশ করেছে।
বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, ঐক্যমতোর ভিত্তিতে সংশোধনীর প্রস্তাব এসেছে। একটা আইন আছে, ওই আইনের ধারায় তারা পরিচালিত হবে। এখতিয়ার ও ক্ষমতার ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি আনসার বাহিনী ব্যবস্থা নিতে পারবে।