আদালত কক্ষে আসামিদের জন্য স্থাপিত কাঠগড়ায় ‘লোহার খাঁচা’ অপসারণ চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠানো হয়েছে। হাইকোর্টের ১০ আইনজীবীর পক্ষে গত রোববার ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। নোটিশটি আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতের এজলাস থেকে লোহার খাঁচা অপসারণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, মৌলিক অধিকারের সুরক্ষার্থে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
নোটিশে বলা হয়, দেশের সিংহভাগ আইন ও আদালতের ব্যবস্থা এবং অবকাঠামো ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি। আদালতে আসামি হাজিরার জন্য কাঠগড়ার প্রচলন ব্রিটিশ আমলে শুরু হয়। তবে দুর্ধর্ষ আসামি, ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করানো হতো। বিচার শেষে দোষিকে লোহার খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে- এমন ইতিহাস রয়েছে; কিন্তু বিচার চলাকালে আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দি করে রাখার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না। ভারতেও সাধারণ আদালতের কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার ব্যবহার নেই।
নোটিশে আরো বলা হয়, সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ ও আন্তর্জাতিক বিধানাবলীতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির সঙ্গে নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনামূলক কাজ করা যাবে না। আদালতে কাঠগড়ার পরিবর্তে লোহার খাঁচার ব্যবহার অমানবিক। দেশের প্রচলিত আইন সংবিধানের ‘পরিপন্থি’। নিম্ন আদালতে কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার মাধ্যমে তেমনটিই করা হয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে লোহার খাঁচা অপসারণ করে সেখানে কাঠগড়া স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।