বাংলাদেশে কল থেকে যে পানি বের হয়, তা পান করা নিরাপদ নয়। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা ইয়েল ইউনিভার্সিটির এক সূচকে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপদ পানীয় জলের প্রবেশাধিকারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম এবং সামগ্রিকভাবে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১২৮তম।
২০২২ খ্রিষ্টাব্দের জন্য তৈরি করা এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্সে (ইপিআই) ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ ২৬ দশমিক ৯০ মান অর্জন করেছে। এর অর্থ হচ্ছে, আমাদের দেশের কলের পানি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শুধু নেপাল (২৫.৯০), ভারত (১৮.৩০) ও পাকিস্তানের (১৫.৩০) চেয়ে এগিয়ে। এই অঞ্চলে শ্রীলঙ্কা ৪৬.৭০ স্কোর নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে। এরপর যথাক্রমে মালদ্বীপ (৪১.২০), ভুটান (৩১.৫০) ও আফগানিস্তানের (২৭.৮০) অবস্থান। ইয়েল ইউনিভার্সিটির এই সূচকে অনিরাপদ পানীয় জলের সংস্পর্শে আসার কারণে প্রতি এক লাখ জনে প্রাণ হারানো, শারীরিক অক্ষমতা ও অন্যান্য ঝুঁকিতে পড়া মানুষের সংখ্যা মূল্যায়ন করে পানীয় জলের গুণমান বিচার করা হয়েছে। তালিকার সব দেশকে ০ থেকে ১০০ পর্যন্ত মান দিয়ে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। ১০০ মান অত্যন্ত নিরাপদ পানীয় জল নির্দেশ করে এবং ০ মান সবচেয়ে অনিরাপদ পানীয় জল নির্দেশ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য মতে, বাংলাদেশে কল থেকে যে পানি বের হয় তা পান করা নিরাপদ নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশেরও বেশি মানুষ পানির সংকটে থাকা দেশগুলোতে বাস করে এবং একই সংখ্যক মানুষ মলমূত্র দ্বারা দূষিত পানীয় জলের উৎস ব্যবহার করে। এ কারণে প্রতিবছর কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড ও পোলিওসহ নানা রোগ পানীয় জলের মাধ্যমে ছড়ায়। এসব পানির সাধারণ রাসায়নিক দূষকগুলোর মধ্যে রয়েছে– সিসা, পারদ, কীটনাশক, ওষুধ ও প্লাস্টিক কণা।
সূচকে সর্বনিম্ন নম্বর পাওয়া ২৪টি দেশের সবগুলোই আফ্রিকার। সিডিসি ১৮০টি দেশের মধ্যে শুধু ৫০টি দেশের পানিকে পানযোগ্য ট্যাপ ওয়াটার হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
সিডিসি এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার বেশিরভাগ অংশে এবং আফ্রিকার প্রতিটি দেশের কলের পানি পান করার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করে থাক। সংস্থাটির মতে, দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশেই পানযোগ্য ট্যাপের পানির সরবরাহ নেই।