রাজধানীর পুরান ঢাকার মনিজা রহমান গার্লস স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফুন নাহারের অপসারণ দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীরা। তাদের অভিযোগ অধ্যক্ষের কারণে তাদের এসএসসির রেজিস্ট্রেশন করা যায়নি। তাই অধ্যক্ষের পদত্যাগ ও এসএসসির রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা। এ দুই দফা দাবিতে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এতে অভিভাবকদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে। এ পরিস্থিতিতে ঢাকা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, মনিজা রহমান গার্লস স্কুলের আন্দোলনরত ছাত্রীরা রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মনিজা রহমান গার্লস স্কুলের যেসব শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশনের জন্য আন্দোলন করছেন তাদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেয়া হবে। বিশেষ পন্থায় তাদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
এদিকে রোববার সকাল থেকে এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ও অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে মনিজা রহমান গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে হাইকোর্ট, মৎস্য ভবন মোড় ও পল্টন এলাকার রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় এবারের এসএসসি পরীক্ষা দেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে তারা। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৮০ জন ও ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩০০ জন এসএসসি শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মুখে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মনিজা রহমান গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ২৮০ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ আগে শিক্ষার্থীরা জানতে পারে, তাদের রেজিস্ট্রেশন এখনো হয়নি। এজন্য প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ লুৎফুন নাহারকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছে, লুৎফুন নাহার একসঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে তারা শুনেছেন। তবে এখনো তিনি দুই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে আছেন কি না, সেটি তাদের জানা নেই। বোর্ড থেকে অধ্যক্ষের পদত্যাগের কথা বলা হলেও তিনি পদত্যাগ করছেন না। বোর্ডও শিক্ষার্থীদের কোনো সহযোগিতা করছে না। রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় সন্তানদের এসএসসি পরীক্ষা দেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন অভিভাবকরাও। বিক্ষোভে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কয়েকশো শিক্ষার্থীসহ অভিভাবক ও শিক্ষকরা অংশ নেন।
জানা গেছে, রাজধানীর গেন্ডারিয়ার মনিজা রহমান গার্লস এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ লুৎফুন নাহারের বিরুদ্ধে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই নিয়োগ পেয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা ছাড়াই অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে ঢাকা বোর্ড। এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ থাকাকালীন টাঙ্গাইলের একটি কলেজের অধ্যক্ষ পদের চাকরি করার অভিযোগেরও প্রমাণ মিলেছে। এ পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বোর্ড। বোর্ড থেকে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো।