বিখ্যাত কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর আজ জন্মদিন। তার দুটি দীর্ঘ কবিতা ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি এবং ‘বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা’ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডারে অভূতপূর্ব সংযোজন। তিনি ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর-ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ খান।
তিনি বিচারপতি ও সাবেক স্পিকার আবদুল জববার খানের পুত্র। আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় পিতার কর্মস্থল ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন এবং অনার্সসহ এমএ পাস করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে লেকচারার হিসেবে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু হলেও পঞ্চাশ দশকের ক্যারিয়ারিস্ট জেনারেশনের চলতি রীতি ধরে তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সরকারের কৃষি ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ পঞ্চাশ দশকের অন্যতম কবি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তার কবিতায় আবহমান বাংলার অকৃত্রিম ছবি পাওয়া যায়। তার কবিতার সূচনা ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এবং বিকাশ ঘটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের সামগ্রিক জনজীবনের আশা-নিরাশা এবং স্বপ্ন-বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ,আমার সময় (১৯৮৭), নির্বাচিত কবিতা (১৯৯১), আমার সকল কথা (১৯৯৩), খাঁচার ভিতর অচিন পাখি এবং জীবিত অবস্থার সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ মসৃণ কৃষ্ণগোলাপ (২০০২)। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণাধর্মী গ্রন্থ রচনা করেছেন। কাব্য রচনার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৯) লাভ করেন। তিনি ‘পদাবলি’ নামে কবিদের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
বিখ্যাত এই কবি ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।