কুড়িগ্রামের রৌমারীতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত ‘কৃষক সমাবেশে’ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় শহীদ আবু সাঈদের হত্যা মামলার প্রধান আইনজীবী ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির ন্যায়পাল রায়হান কবির, সমাবেশের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিনুসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
জামায়াত-শিবির পরিচয়ে কয়েকজন যুবক এ হামলা করেন বলে অভিযোগ আয়োজকদের। তবে জামায়াত হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, সমাবেশে আওয়ামী ঘরানার লোকজন ছিল। সেখানে কোনো কৃষক কিংবা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের লোকজন ছিল না।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন জামায়াতের শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ, যুবনেতা মাহবুব আলম এবং অন্তর। মাহবুব উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান বঙ্গবাসীর জামাতা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির ন্যায়পাল রায়হান বলেন, ‘আমাদের পূর্বনির্ধারিত কৃষক সমাবেশস্থলের কাছে জামায়াত-শিবির পরিচয়ে কয়েকজন যুবক এসে সমাবেশ করতে বাধা দেন। এতে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে আমাদের ওপর হামলা করেন তাঁরা। আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিনু, ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি নাহিদ হাসানসহ আমাকে মারধর করা হয়।’
রায়হান আরো বলেন, তাঁরা এসে বলেন, এটা রাষ্ট্রবিরোধী সমাবেশ। এ সমাবেশ আপনারা করতে পারবেন না। রাষ্ট্র সংস্কার হয়ে গেছে। রাষ্ট্র সংস্কার আমরা করব। আমরা ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কার হবে না।
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও অবহেলাকে দায়ী করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের এই নেতা বলেন, এখানে পুলিশের চরম অসহযোগিতা ছিল। প্রথমে পুলিশ এসে স্টেজ খুলেছে। তারপর তারা চলে গেছে। পরবর্তী সময়ে আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা ফোন ধরেনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ ফরিদ বলেন, কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। কৃষক সমাবেশের নামে সেখানে আওয়ামী লীগের লোকজন একত্র হয়েছিল। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা স্থান ত্যাগ করে। আয়োজকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। কোনো হামলা হয়নি।
জামায়াতে ইসলামীর রৌমারী উপজেলা শাখার আমির হায়দার আলী বলেন, সমাবেশটি আওয়ামী ঘরানার লোকজনদের নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে কৃষক বা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেউ ছিলেন না। এ ধরনের সমাবেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’ হামলার অভিযোগ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হামলাকারী বলে যাঁদের নাম বলা হচ্ছে তারা জামায়াতের কেউ নয়। এখন জামায়াতের সুদিন আসায় অনেকে জামায়াতের সঙ্গে ঘুরতে পারে। আমাদের কেউ জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান বলেন, হামলা নয়। সামান্য ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে।
সমাবেশ নিয়ে জামায়াতের বিরোধিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা (জামায়াত) বলেছিল, এই সমাবেশের আয়োজকেরা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ। সমাবেশ নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল।