আমাদের একমাত্র লক্ষ্য জনগণের সেবা করা : প্রধান বিচারপতি

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি |

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আমরা সবাই স্বীকার করি, এই প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। আমরা যে যেখানে যেই কাজই করি না কেন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য জনগণের সেবা করা। 

শনিবার (৪ মার্চ) সকালে চুয়াডাঙ্গা আদালত প্রাঙ্গণে আগত বিচার প্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার 'ন্যায়কুঞ্জ' এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে এসব কথা বলেন তিনি। এরপর আদালত প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণসহ জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে মতবিনিময় করেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ন্যায়কুঞ্জের কনসেপ্টটা আমরা ভাবনা চিন্তা করেই করেছি। এই আদালত, এই অফিস সবকিছুই জনগণের স্বার্থে, জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য মূলত এইগুলো তৈরি করা। সবার দায়িত্ব হচ্ছে জনগণ সব সেবা যাতে সহজভাবে পায়, স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করে, এই চিন্তা থেকেই আমরা এই কনসেপ্টটা করি। গ্রামগঞ্জ ও দূর-দূরান্ত থেকে যেসব মানুষ আদালত চত্বরে আসেন, বিশেষ করে নারীদের বেশি সমস্যা পোহাতে হয়। অনেকে বাচ্চা নিয়ে আসেন আদালত চত্বরে, তাদের বসার জায়গা, পানি খাওয়া, টয়লেট ব্যবহার করতে হয়। এই চিন্তা থেকে আমি শপথ নেওয়ার পরপরই মাননীয় প্রাধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করি, প্রত্যেক আদালত চত্বরে এরকম কোনো বিশ্রামগার করা যায় কিনা। প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টে বিজয় একাত্তর উদ্বোধনের দিন ওয়াদা করেন এটা করে দেবেন। সারাদেশে বিচার পেতে আসা মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এই বিশ্রামগার 'ন্যায়কুঞ্জ' করার জন্যে ইতোমধ্যে ৩৫ কোটি টাকা বাজেট হয়েছে। দেশের প্রতিটি আদালত চত্বরে এই ন্যায়কুঞ্জ হবে। 

চুয়াডাঙ্গায় মামলার জট বেড়েই চলেছে এই প্রসঙ্গে সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, গত সুপ্রিম কোর্ট দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আমরা বলেছি, এতোদিনে যে মামলা জট হয়েছে, এই জট কমাতে আরও প্রায় ৫ হাজার জুডিসিয়াল অফিসার দরকার। আমি আসার পরপরই একটি সার্কুলার ইস্যু করি, পুরনো মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পতির ব্যবস্থা করি। 

তিনি আরও বলেন, আপনারা শুনলে খুশি হবেন, সারাদেশে গত এক বছরে ডিসপোজালের রেট আগের বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আমাদের যে কয়জন অফিসার আছেন তারা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু মামলার জট কয়েকজন অফিসার দিয়ে শেষ করা সম্ভব না। আমরা চেষ্টা করব আরও অফিসার চুয়াডাঙ্গাতে দেওয়ার জন্য। 

বিচারকরা সময়মতো আসেন না সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকেরা সময় মতো আসেন না এই কথাটা আমি শতভাগ সঠিক বলে গ্রহণ করতে পারছি না। কারণ আমি প্রধান বিচারপতি হবার পরপরই চিঠি দিয়েছি যে আপনারা সময়মতো অফিসে বসবেন। আর বিচারকের কাজ শুধুমাত্র কোর্টে বসায় না। তাদের জাজমেন্ট অর্ডার লিখতে হয়, তারা অফিস টাইমে অফিস তো করেই, যেকোনো কারণে সই-স্বাক্ষর-জানমেন্ট, অর্ডার লিখতে দেরি হতে পারে। তারা রাতেও বাড়িতে কাজ করেন। অনেক রাত ধরে জানমেন্ট লিখতে হয়, কারেকশন করতে হয়, আইনের ব্যাখ্যা দেখতে হয়। তারপরেও কেউ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে আমি প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপনাদেরকে আশ্বস্ত করছি, আমার কাছে অভিযোগ এলে অ্যাকশন নিতে এক মিনিটও দেরি করব না। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, হাইকোর্ট বিভাগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং সদস্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (ঢাকা) বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম, চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ জিয়া হায়দার, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান,  চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুসরাত জেরিন, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুর রহমান শিশির, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক, অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি সাগরসহ জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উপস্থিত ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প বিসিএসে আনুকূল্য পেতে যেচে তথ্য দিয়ে বাদ পড়ার শঙ্কায় - dainik shiksha বিসিএসে আনুকূল্য পেতে যেচে তথ্য দিয়ে বাদ পড়ার শঙ্কায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাকে উপাচার্যের পিএস নিয়োগ - dainik shiksha বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাকে উপাচার্যের পিএস নিয়োগ ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ জাল সনদে চাকরি করছেন এক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছেন এক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ছাত্র আন্দোলনে নি*হত ৯ মরদেহ তোলার নির্দেশ - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নি*হত ৯ মরদেহ তোলার নির্দেশ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029959678649902