আমাদের বার্তায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর দশ স্কুল অডিট আদেশ বাতিল

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তা ও ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর ডিআইএ‘র সেই বিতর্কিত কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ শফিউল্লা দিদারের শেরপুরের দশ স্কুল অডিটের আদেশ বাতিল করেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। বৃহস্পতিবার ডিআইএ‘র এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা গেছে। 

৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দৈনিক আমাদের বার্তা  ও দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই অডিটে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের আট ঘন্টার মধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নজরে আসে। তোলপাড় সৃষ্টি হয় সারাদেশে। এরপরই বৃহস্পতিবার দুপুরে অডিটের আদেশ স্থগিত করতে বাধ্য হন ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক কাজী মো. আবু কাইয়ুম। মন্ত্রণালয় ও ডিআইএর একাধিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। অডিট আদেশ স্থগিত হওয়ার স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন শেরপুরের দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী। 

সংবাদে বলা হয়, তাদের মিছিলে ভাষা শুনে ছি ছিক্কার রব উঠেছিলো শিক্ষাসহ সচেতন সব মহলে। তারা সবাই বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার। গত ৪ আগস্ট তারা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে মিছিল করেন। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর চট্টগ্রামের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তি দাবির পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও অশালীন বাক্য ব্যবহার করেন। গত পাঁচ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ওই মিছিলকারীদের শাস্তি দাবি করেন শিক্ষা ক্যাডারের নিরপেক্ষ এবং বিএনপি ও জামায়াতপন্থী কর্মকর্তারা।

তারা আশা করেছিলেন, কিছু একটা শাস্তি হবে। গত ২৪ আগস্ট বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত শিক্ষা ক্যাডার অধ্যাপক কাজী মো. আবু কাইয়ুমকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক নিযুক্ত করা হলে সে আশার পালে আরো হাওয়া লাগে।  

কিন্তু না, বিএনপি বিরোধীরা বিএনপিপন্থীর কাছেই পুরস্কৃত হয়েছেন। কীভাবে, সেটার ব্যাখ্যাটা তাহলে শুনুন।

দেশের প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন ও নিরীক্ষায় গিয়ে নিজেদের ‘মিনিস্ট্রি অডিটর‘পরিচয় দেন ডিআইএতে বদলিভিত্তিক পদায়ন পাওয়া বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা। একেকজন কর্মকর্তাকে প্রতিটি ট্যুরে কমপক্ষে দশটি করে প্রতিষ্ঠান অডিট/পরিদর্শন অথবা তদন্ত করতে পাঠানো হয়। ডিআইএতে কর্মরত এসব শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কাছে জম হিসেবে পরিচিতি। অভিযোগ আছে, একবার তারা কোনো প্রতিষ্ঠানে তদন্ত, অনুসন্ধান, পরিদর্শন বা অডিটে গেলে সেই প্রতিষ্ঠানকে গুনতে হয় কমপক্ষে চার লাখ টাকা। এককালীন টাকা দেয়ার সক্ষমতা না থাকলে এমপিওর (বেতনভাতার সরকারি অংশ) চেক পাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে প্রতিষ্ঠান প্রধান সব সহকর্মীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেন বলেও জোর অভিযোগ।

গত ২৪ আগস্ট নিয়োগ পাওয়া পরিচালক কাজী মো. আবু কাইয়ুম গত ২ সেপ্টেম্বর আদেশ জারি করেন যে, ডিআইএতে শিক্ষা পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত সরকার মোহাম্মদ শফিউল্লা দিদার ৫ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর অবধি শেরপুর সদরের দশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তদন্ত ও পরিদর্শন করবেন। এমন আদেশে দেখে চমকে ওঠা শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলছেন, আমরা সংবাদ সম্মেলন করে যাদের শাস্তি দাবি করেছি, যারা ক্যাডার কর্মকর্তা তো দূরের কথা প্রজাতন্ত্রের কোনো ধাপের কর্মচারী যে আচরণ করতে পারেন না তারা তাই করেছেন, তাদেরকে এভাবে পুরস্কৃত হতে দেখে আমরা স্তম্ভিত।

একজন অধ্যাপক জানান, শফিউল্লা দিদার সাবেক বিতর্কিত শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ভাইকে ঘুষ দিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। আর ৩০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে ডিআইএতে বদলিভিত্তিক পদায়ন নিয়েছেন কয়েকমাস আগে। মাউশি অধিদপ্তরের বিতর্কিত সাবেক কলেজ পরিচালক শাহেদুল খবিরের অন্যতম ক্যাশিয়ার ছিলেন দিদার। সহকর্মীদের বঞ্চিত করে নিজে পদোন্নতি নিয়েছেন।

যদিও এসব অভিযোগের বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে অস্বীকার করেন দিদার। তবে কীভাবে দশ স্কুল অডিটের অনুমতি পেলেন জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি তিনি।  

অভিযুক্ত ডিআইএ কর্মকর্তাদের অডিটের আরো খবর জানতে চোখ রাখুন শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তা ও ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038909912109375