তিনদিন কর্মবিরতি পালনের পর আরো দুই দিন কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন বিভিন্ন সরকারি কলেজ ও শিক্ষার দপ্তরে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকরা। আজ বৃহস্পতিবার তাদের তিনদিনের কর্মবিরতি শেষ হয়। নতুন করে ফের আগামী ১৭ ও ১৯ অক্টোবর এ কর্মবিরতি ঘোষণা করা হলো। তবে, আগামী ১৮ অক্টোবর ‘শেখ রাসেল দিবস’ পালনে এদিন কর্মবিরতির বাইরে রাখা হয়েছে। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন, সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষা ক্যাডারভুক্তদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি গত মঙ্গলবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে।
বৃহস্পতিবার প্রথম দফার কর্মবিরতির তৃতীয় দিনে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।
শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের কর্মসূচি শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, নায়েমসহ বিভিন্ন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোসহ সব সরকারি কলেজে কর্মবিরতি পালনের কথা সমিতির পক্ষে থেকে বলা হলেও বাস্তবিক কর্মবিরতি চলছে শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও সরকারি কলেজগুলোতে। কর্মবিরতির দিনগুলোতে শিক্ষকরা কলেজে উপস্থিত থাকলেও কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেননি। ফলে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। শিক্ষার দপ্তরগুলোতে ব্যাকডেটে স্বাক্ষর করে কাজ চালানো হলেও স্থবির হয়ে পড়েছে সরকারি কলেজগুলো। জিম্মি হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী। দফায় দফায় পরীক্ষা পিছিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে সেশনজটের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতে সরকারি কোষাগারের বেতনভোগী সরকারি শিক্ষকদের এ কর্মবিরতি নিয়ে শিক্ষার্থীরা নানা প্রশ্ন তুলছেন। কিস্তু দাবি মানার বিষয়ে সরকারের তরফে কোনো পদক্ষেপ নেই। তবে, শিক্ষামন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, তাদের দাবির বিষয়ে সরকার ওয়াকিবহাল।
প্রথম দফার কর্মবিরতির তৃতীয় দিনে সমিতির অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির ও মহাসচিব মে. শওকত হোসেন মোল্লা স্বাক্ষরিত ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা আশা করেছিলাম দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার স্বার্থে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণে কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসবেন। কিন্তু এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এ কারণে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ১৭ ও ১৯ অক্টোবর সর্বাত্মক কর্মবিরতি ঘোষণা করা হলো। ১৮ অক্টোবর যথাযোগ্য মর্যাদায় 'শেখ রাসেল দিবস' পালনের জন্য দিনটি সর্বাত্মক কর্মবিরতির বাইরে রাখা হলো।
নেতার আরো জানান, আগামী ১৭ ও ১৯ অক্টোবর দেশের সব সরকারি কলেজ, সরকারি আলিয়া মাদরাসা, সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, সব শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি, নায়েম, ব্যানবেইসসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সব দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা সর্বাত্মক কর্মাবরতি পালন করবেন। ক্লাস, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি, ফরম পূরণ, সব ধরনের পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং দাপ্তরিক সকল কর্মকাণ্ড কর্মবিরতির আওতায় থাকবে।
জানা গেছে, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন, সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণ, অর্জিত ছুটি দেয়া এবং আনুপাতিক হারে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডসহ প্রয়োজনীয় পদসৃজন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তর অধিদপ্তরের জন্য বিসিএস সাধারণ শিক্ষা কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার রুলস- ১৯৮০ পরিপন্থী সব নিয়োগবিধি বাতিল, শিক্ষা ক্যাডার তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের প্রত্যাহার, জেলা উপজেলায় শিক্ষা ক্যাডার পরিচালিত শিক্ষা প্রশাসন সৃষ্টি ও চাকরীর ৫ বছর পূর্তিতে ষষ্ঠ গ্রেড দেয়াসহ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকরা গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করলেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।